মানিকগঞ্জে বর্ষার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে নৌকার চাহিদা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ডিঙি নৌকার চাহিদা। চাহিদা মেটাতে স্থানীয়ভাবে ধুম পড়েছে নৌকা তৈরিতে। গত কয়েক দিন নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌকা তৈরির কাজ।
ইতোমধ্যে নৌকা তৈরিকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠমিস্ত্রি ও কারিগররা। নতুন নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজও করছেন তারা।
নৌকা তৈরির কারিগররা জানান, বর্ষা মৌসুমি ছাড়া অন্য সময়গুলোতে তারা পারিবারিক কাজ ও কৃষি কাজ করে থাকেন। তবে পেশাদার কাঠ মিস্ত্রিরা নৌকা তৈরি ছাড়াও ঘর নির্মাণ ও অন্য আসবাবপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাঠ মিস্ত্রিরা কেউ কাঠ চিরাচ্ছেন, কেউ তক্তা ও গুড়া বানাচ্ছেন, আবার কেউ রান্দা দিয়ে কাঠ মসৃণ করছেন, কেউ কেউ তক্তা জোড়া লাগাচ্ছেন।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের ঝিটকা বাজারের নৌকা তৈরির কারিগর রুবেল মিয়া জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নৌকা তৈরির অর্ডার বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট ডিঙি নৌকার অর্ডার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে সকল সাইজের নৌকাই তৈরি হচ্ছে। ছোট ডিঙি নৌকা সাধারণত ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নৌকা কত হাত হবে তার ওপরে এর দামের কমবেশি হয়।
নৌকা তৈরির কারিগর (মিস্ত্রি) অনিল বলেন, ছোটবেলা থেকে বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করি। বড় নৌকার চেয়ে ছোট ডিঙ্গি ও কোশা নৌকার চাহিদা বেশি। ১০ থেকে ১২ হাত দৈর্ঘ্যের প্রতিটি নৌকা বানাতে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়। বিক্রি করা যায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায়।
একই এলাকার কাঠ মিস্ত্রি গোবিন্দ বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত থাকি। বছরের অন্য সময় নৌকা তৈরি ছাড়াও ঘর, খাট, চেয়ার, টেবিল, ড্রেসিং টেবিল, আলনা, আলমারি ইত্যাদি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করি।
তিনি আরও বলেন, একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে ২-৩ দিন সময় লাগে। খরচ পড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। হাটে উঠালে একটি ছোট নৌকা ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।
নৌকা কিনতে আসা জসিম মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামটি খুবই নিচু। সামান্য বর্ষাতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বর্ষার সময় একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা। বানের পানি নদী দিয়ে খাল-বিলে ঢুকতে শুরু করছে তাই নৌকা কিনতে এসেছি। নৌকার দাম ঠিক আছে। আমার কাছে মনে হয়ছে একটু কম দামেই নৌকা ক্রয় করতে পেরেছি।
উপজেলার ঝিটকা বাজারের নৌকা ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম জানান, গত বছর পানি না হওয়ার কারণে ব্যবসায় লোকসান হয়েছে। আশা করছি এবার কিছুটা হলেও ভালো ব্যবসা হবে। সর্বোপরি আমাদের ব্যবসাটা মূলত পানির ওপর নির্ভর করে। পানি বেশি হলে নৌকার চাহিদা বাড়ে। এতে করে বিক্রির পরিমাণও বাড়ে।
(ঢাকাটাইমস/০৬জুলাই/পিএস)

মন্তব্য করুন