বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা

মো. রাফিউল হুদা, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৫
অ- অ+

নতুন জামা, বাড়ি ফেরার তাড়া আর প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানো আনন্দঘন সময়— ঈদ মানেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এক অন্যরকম উচ্ছ্বাস। সারা বছরের পড়াশোনা আর ব্যস্ততার ফাঁকে ঈদ যেন নিয়ে আসে প্রশান্তির পরশ।

তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ঈদ ভাবনায় থাকে ভিন্নতা। কেউ বাড়ির পথে, কেউ বন্ধুর সঙ্গে ক্যাম্পাসে, আবার কেউ ঢাকায় থেকেই উদযাপন করে প্রিয় উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই বৈচিত্র্যময় ঈদ ভাবনাই তুলে ধরেছেন ঢাকা টাইমসের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. রাফিউল হুদা।

আত্মকেন্দ্রিক না হোক এবারের ঈদ

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের জন্য আসে কাঙ্ক্ষিত ঈদ। ঈদ মানেই আনন্দ আর খুশির দিন। এই আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য মানুষ ছুটে যায় নাড়ির টানে। সারা বছর অনেকের ঝামেলার মধ্যে কাটলেও ঈদের আনন্দ তা ভুলিয়ে দেয়।

রমজান মাস আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ সময়। ফলে ঈদ ধনী-গরিবের মাঝে বৈষম্য দূর করে সাম্যের কথা বলে। ঈদে শুধুই অভিজাত পোশাকে বিলাসিতা না করে শ্রেণি বৈষম্য ভুলে আমাদের উচিত আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানো। এই উৎসবে আমরা হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সাম্য, মৈত্রী, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই।

এবারের ঈদে আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং গবিব-দুঃখীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করলে উৎসবটি হয়ে উঠতে পারে সবার জন্য সমান আনন্দের। বিশেষ করে নিজ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের পাশে থেকে তাদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখা এবারের ঈদে আমাদের সবার দায়িত্ব।

কামরুল হাসান (শিক্ষার্থী,ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ) হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এক মাস পবিত্র মাহে রমজানের পর ঈদের দিনটা আমাদের সকল মুসলিমের জন্য অনেক আনন্দের। রমজান শেষ হয়ে যাওয়ার পর অপেক্ষা করি কখন আবার বছর ঘুরে এ মাসটা শুরু হবে। পড়াশুনার জন্য বাড়ির বাইরে বের হওয়ার পর থেকে সেই ছোটবেলার মতো এখন আর পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা হয় না। ভার্সিটিতে উঠার পর মিডটার্ম, ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, সেমিস্টার ফাইনাল, এসাইনমেন্ট- এগুলোর মধ্যে দিয়ে রমজান মাস পার করতে হচ্ছে। সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে থাকি কবে শেষ হবে এসব আর কবে বাড়ি যাবো। ঈদের ছুটি যেন শুরুই হতে চায় না।

ঈদে বাড়ি যাওয়ার আগে নিজের টিউশনের টাকায় মা-বাবার জন্য কিছু কিনে নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। ছোটবেলার বন্ধুবান্ধব সব আলাদা জায়গায় চলে যাওয়ায় কারও সঙ্গে আগের মত দেখাও হয় না। একমাত্র ঈদের এই ছুটিগুলোর জন্য সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে থাকি, কবে বাড়ি যাবো আর তাদের সঙ্গে দেখা হবে। আত্মীয় স্বজন সবার সঙ্গে এই ঈদের ছুটিগুলোতেই দেখা হয়। এলাকার মাঠঘাট ঘুরে দেখা হয়। স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া হয়। পরিবার ছাড়া ঈদ কখনোই সম্পূর্ণ মনে হয় না আমার কাছে। ঈদ মানেই খুশি। প্রতিবছর ঈদ সবার জীবনে আনন্দ বয়ে আনুক।

কাজল (শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

ত্যাগের মাধ্যমেই অর্জিত হয় প্রশান্তির প্রতিটি পশলা। যার ত্যাগ যত বেশি, তার তত বেশি প্রশান্তির স্নিগ্ধ ছোঁয়া। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি ও বিধানের মাঝে এই ত্যাগের উপস্থিতি নিশ্চিত করে প্রতিদানের পরিধি গড়েছেন। ঈদ মানেই আমরা আনন্দ বুঝি, কিন্তু দুটি ঈদের আগেই রয়েছে ত্যাগের এক মহাপরীক্ষা। আত্মশুদ্ধি ও সংযমের মহান বার্তা নিয়ে পরিশুদ্ধ প্রাণ ও পাথেয় অর্জনের প্রশিক্ষণাক্ষণ হয়ে ধরা দেয় মাহে রমজান। সাওমের মাধ্যমে শারীরিক ও আত্মিক ত্যাগের (শুদ্ধি) পাশাপাশি জাকাত, ফেতরার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ত্যাগ নিশ্চিত করে ভেদাভেদের জঞ্জাল গুঁড়িয়ে এক কাতারে জমায়েতের লগ্ন ঈদগাহ।

তবে আমাদের ত্যাগ কি আসলেই ত্যাগ নাকি লৌকিকতা, তা প্রশ্নের দাবিদার। ‘সাহরি-ইফতার ডান’, ‘বিশাল পরিসরে রোজাদারদের ইফতার করালাম’, ‘গাইজ আজ এতো গরিবদের জাকাত দিলাম’, ‘আলহামদুলিল্লাহ ৩০ রোযা সম্পন্ন’,- এ ধরণের আলাপচারিতার গহীনে খাস নিয়তের ঘাটতি রয়েছে কিনা, তা সবার আগে অনুভব করা প্রয়োজন। নতুবা এসব কিছুই কেবল বাহবা আর লাইক কমেন্টের বাইরে কোনো ফায়দা দেবে না। আমাদের উচিত দান-সদকা, জাকাত-ফেতরা কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যোগ্য হকদারের কাছে গোপনে পৌঁছে দেওয়া। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- ধনাঢ্যদের সম্পদের মধ্যে আল্লাহ অসহায়-দুঃস্থদের অংশ নিশ্চিত করেছেন। সুতরাং তা কোনোভাবেই ধনাঢ্যদের দয়া নয় বরং হকদারের হক বুঝিয়ে দেওয়া, নতুবা তাকেই উল্টো জবাবদিহিতা করতে হবে।

অন্যদিকে, প্রতিটি মুসলমান একে অপরের সঙ্গে আত্মিকভাবে নিগূঢ়ভাবে যুক্ত। এক মুসলমানের কষ্ট মানেই অন্য মুসলমানের বুকে ব্যথা অনুভব ঈমানি দাবি। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের কোনো মুসলমানের বিপদের সকল মুসলিমের পাশে দাঁড়ানো দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে বর্তমান বিশ্বে আমরা তার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত। গাজা, ইয়েমেন, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের গণহত্যায় বিশ্বমুসলিম অভেদ্য ফলা হয়ে আঁছড়ে পড়ার পরিবর্তে নিরব ভূমিকা পালন করছে। যা প্রমাণ করে আজকের মুসলিমরা ঈমানিভাবে দুর্বল থেকে দুর্বলতম। এই ঈদ সকলের ঈমানি জজবা হাজারগুণে বৃদ্ধি করে এক দেহ এক প্রাণ হয়ে সকল মুসলিমের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একত্রিত হবে এই আশাবাদ থাকবে।

সর্বোপরী, ঈদ আমাদের প্রাণে ত্যাগের যে মহানব্রত নিয়ে আলিঙ্গন করে, সে শিক্ষা গ্রহণ করে জীবনের প্রতিটি স্তরে সর্বোচ্চ ত্যাগী হয়ে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দেশ, জাতি ও সমগ্র বিশ্বের জন্য কল্যাণকর সৃষ্টি হিসাবে নিজেকে সঁপে দেওয়ার সাহস ও শক্তি হোক সকলের পাওয়া। ঈদুল ফিতরের অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইলো সকলের প্রতি। ঈদ মোবারক বিশ্ববাসী।

এম. শামীম (শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

দীর্ঘ ১১ মাস পর এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝে ঈদ আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ঈদ মানে শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এক টুকরো আনন্দ, পরিবারের সান্নিধ্য আর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে স্মৃতিচারণের সুযোগ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঈদ যেন এক ভিন্ন অনুভূতি বয়ে আনে। কারও জন্য এটি বাড়ি ফেরার উচ্ছ্বাস, আবার কারও জন্য হলে একা ঈদ কাটানোর বাস্তবতা।

বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। দীর্ঘ সেমিস্টারের চাপ, পরীক্ষা আর এসাইনমেন্টের ভিড়ে তারা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ কমই পায়। প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিয়ে ট্রেন, লঞ্চ, বাসের দীর্ঘযাত্রা— সব কষ্ট ছাপিয়ে যায় মায়ের হাতের রান্না আর পরিবারের ভালোবাসার স্পর্শে। বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত মনে পড়ে, তবু শৈশবের ঈদের স্মৃতি নতুন করে জেগে ওঠে।

কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী নানা কারণে হলে বা মেসে থেকেই ঈদ উদযাপন করে। অনেকের বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, কেউ টিকিট না পেয়ে অথবা কেউ পারিবারিক সমস্যা ও অতিরিক্ত খরচের কথা ভেবে। হলে থাকা শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ঈদ আয়োজন করে, নিজেদের মতো করে আনন্দ খুঁজে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা একটা সময় পরিবারের মতোই হয়ে যায়।

তাই ঈদে অনেকেই বন্ধুদের সঙ্গে বিশেষ পরিকল্পনা করে। কোনো ফ্রেন্ডের বাসায় দাওয়াত, দল বেঁধে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, প্রিয় ক্যাম্পাসে ঈদের ছবি তোলা— এসব নিয়েই ঈদের অন্যরকম রঙিন দিন কাটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঈদ হয়তো কিছুটা ব্যস্ততার মাঝে আসে। কিন্তু সবার মধ্যেই একটা বিষয় এক- ঈদ মানেই আনন্দ, ভালোবাসা আর প্রিয়জনদের সঙ্গে মুহূর্তগুলো উপভোগ করা। বাড়ি হোক বা হল, বন্ধুদের সঙ্গে হোক বা পরিবারের সঙ্গে— সবার জন্যই ঈদ এক বিশেষ অনুভূতির নাম।

রবিউল ইসলাম (শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কিছু উজ্জ্বল মুহূর্ত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এই উৎসবের তাৎপর্য আরও গভীর। বছরের বেশিরভাগ সময়ই তারা ব্যস্ত থাকেন পড়াশোনা, ক্লাস, পরীক্ষা আর বিভিন্ন একাডেমিক চাপ সামলাতে। ঈদ সেই বিরল সময়গুলোর একটি, যখন তারা সব ব্যস্ততা ভুলে আপনজনদের মাঝে ফিরে যেতে পারেন। তবে সময়ের পরিবর্তনে ঈদের অনুভূতিও অনেকের কাছে বদলে গেছে।

শৈশবে ঈদ মানেই ছিল নতুন জামা, সালামি, সেমাই-পায়েস আর আত্মীয়দের সঙ্গে দিনভর আনন্দ। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই উচ্ছ্বাস যেন ফিকে হয়ে এসেছে। এখন ঈদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাড়ি ফেরা। দীর্ঘ সময় পর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করা, পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ঈদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা অনেক শিক্ষার্থীর ঈদ আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে। বাড়ি যাওয়ার ভাড়া বৃদ্ধির কারণে অনেকে দ্বিধায় পড়ছেন, পরিবারের জন্য কেনাকাটা করাও আগের মতো সহজ নয়। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর আনন্দটাই সবার জন্য প্রধান।

অন্যদিকে, অনেক শিক্ষার্থী আছেন যাদের ঈদ ক্যাম্পাসেই কাটে। বিশেষ করে দূরবর্তী জেলার শিক্ষার্থীরা বা যারা কর্মজীবী, তাদের অনেকের পক্ষেই বাড়ি ফেরা সম্ভব হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে তারা নিজেদের মতো করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন, একসঙ্গে নামাজ পড়েন, বিশেষ খাবার খান। কিন্তু পরিবারের শূন্যতা, মা-বাবার স্নেহ, ছোটবেলার ঈদের সেই আবেগের সঙ্গে এই আনন্দ কখনোই তুলনীয় নয়।

সব মিলিয়ে ঈদ শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এক ধরনের আবেগ, ফিরে যাওয়ার তাগিদ, নতুন আশার বার্তা। শৈশবের ঈদ যেমন বদলে গেছে, তেমনি বদলেছে উদযাপনের ধরন। তবে ঈদের মূল বার্তাটি রয়ে গেছে একই— আনন্দ ভাগাভাগি করা, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো, আর নতুন দিনের জন্য আশাবাদী হওয়া।

রাকিবুল হাসান রাকিব (শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

নিঃসন্দেহে ঈদ মুসলিমদের জন্য একটি আনন্দের উৎসব। তবে এটি কেবল আনন্দ-উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি শান্তি, সম্প্রীতি, বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও সৌন্দর্যের প্রতীক। প্রতিবছর ঈদ এলে আমাদের মন ভালোবাসা ও সম্প্রীতিতে ভরে ওঠে। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটানোর মাঝেই যেন ঈদের প্রকৃত সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে। কিন্তু সত্যি বলতে, ঈদ কি আসলেই সবার জন্য আনন্দ বয়ে আনে?

আজ ফিলিস্তিনের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, ঈদের চাঁদ ওঠে ধ্বংসস্তূপের ওপর দিয়ে ধূসর আকাশে। ছোট ছোট শিশুরা নতুন পোশাক তো দূরে থাক, তাদের শেষ আশ্রয়টুকুও গুঁড়িয়ে দিচ্ছে শাসকগোষ্ঠী। তারা হারিয়ে ফেলে স্বজনদের। ঈদের দিনের খুশির বদলে তাদের প্রার্থনা হয় বেঁচে থাকার জন্য। বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত ঘর-পরিবার গুলির আঘাতে নিহত শিশুকে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মা— এই দৃশ্য বিশ্বমানবতাকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করে। কোথায় গেল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী আর নিরাপত্তা পরিষদ?

ঈদ শুধু ব্যক্তিগত আনন্দ বা উৎসবের বিষয় নয়; এটি বিশ্বমানবতা ও একতার আহ্বান জানায়। ঈদের প্রকৃত শিক্ষা হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং শোষিত, নিপীড়িত ও নির্যাতিতদের পাশে থাকা। তাই আসুন, ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিই সেই সব মানুষের সঙ্গে, যারা কষ্টে আছে, বিশেষ করে মজলুমদের সঙ্গে। ফিলিস্তিনসহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তের নির্যাতিত মানুষের জন্য আমরা শান্তি কামনা করি, যেন এক দিন সত্যিকারার্থেই ঈদের খুশি সবার ঘরে পৌঁছে যায়।

মো. জাহিদুল হক (শিক্ষার্থী,ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদ মানেই আনন্দ, খুশি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ভিন্ন এক অনুভূতির নাম। বছরের অধিকাংশ সময় ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট প্রেজেন্টেশন আর পড়াশোনার চাপে কাটানো শিক্ষার্থীরা ঈদের ছুটিতে পরিবারের কাছে ফেরার জন্য মুখিয়ে থাকে। দূরের শহরে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য ঈদ মানে বাড়ি ফেরা, প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো, মায়ের হাতের রান্না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঈদ মানে নতুন পোশাকের চেয়ে প্রিয়জনদের সান্নিধ্য, নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার আনন্দ, আর কখনো কখনো একাকীত্বের অনুভূতিও।

ঈদের দিনে পরিবার,বন্ধু পাড়াপড়শির সঙ্গে ঈদগাহে জামাতে নামাজ পড়া হৃদয়ে ভিন্ন এক অনুভূতির দোলা দেয়। ঈদের দিনে গ্রাম ছেড়ে বাইরে থাকা অনেক পরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। যা বছরের অন্য সময় সম্ভব হয় না। তাই বলা যায়, ঈদ যেন পরিচিতজনদের এক মিলনমেলা।

(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
 হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেতা সিদ্দিক ৭ দিনের রিমান্ডে
আধুনিক বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
বগুড়ায় অ‌টো‌রিকশা চালক হত্যার দায়ে দুজ‌নের মৃত্যুদণ্ড
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা