দেশে থেকেও দুদকে হাজির হননি মোহাম্মদ আলী মিয়া, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আসছে শিগগিরই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:০৫| আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:০৯
অ- অ+

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হননি। সোমবার তার দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তিনি হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় চেয়ে চিঠি পাঠান।

দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি দেশেই আছেন। তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে তার পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি মিললে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন ইমিগ্রেশনে কাগজ চলে যাবে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া আইনজীবীর মাধ্যমে দুদকে যে কাগজ পাঠিয়েছেন তা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কাগজ এখনো হাতে পায়নি। সেটা পেলে বোঝা যাবে তিনি কতদিন সময় চান। তবে আমরা তলবের চিঠি দেওয়ার পর ১৫ দিন পর্যন্ত সময় দিই। এরমধ্যে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ১৩ মার্চ দুদক তার বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। সিআইডির সাবেক এই প্রধান ছাড়াও তার দুর্নীতিতে সহায়তাকারী সিআইডির প্রশাসন শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর পশ্চিম) এ কে এম ইমরান ভূঁইয়া, সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, পরিদর্শক মানব শাহাজাদা ও পরিদর্শক মনিরুজ্জামানের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

আরও পড়ুন> ড. ইউনূস ও তাবিথ আউয়ালকে ফাঁসাতে ফাঁদ পাতে মোহাম্মদ আলী মিয়া

আজ (সোমবার) সকালে মোহাম্মদ আলী মিয়াকে স্বশরীরে হাজির হতে বলে দুদক। অনুসন্ধানের স্বার্থে মোহাম্মদ আলীর বক্তব্য প্রয়োজন বলে তাকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বিসিএস ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট সিআইডি প্রধান হন। এর আগে তিনি ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

সিআইডিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোহাম্মদ আলী মিয়া হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আদালতের আদেশে সিআইডিতে আসা চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন মামলা তদন্তে ঘুষ আদায়ে ‘বিশেষ সিন্ডিকেট’ গড়ে তোলেন তিনি। গত দুই বছরে তার নির্দেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় মূল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলাটি অন্যতম।

তাছাড়া অনেক মামলায় তদন্তে নাম আসা আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়া, সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও মামলায় আসামি করা— এমন অনেক অভিযোগ আছে মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। তার অনৈতিক নির্দেশনা মেনে যেসব কর্মকর্তা কাজ করতে রাজী হননি, তাদেরকে হয় বদলি অথবা ডেকে নিয়ে হেনস্তা করতেন।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট মোহাম্মদ আলীকে সিআইডি থেকে সরিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানায় দুই আন্দোলনকারীর মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়।

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করেন মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. জোবায়দুর রহমান জনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে চার কোটি টাকা নিয়েছেন সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। এ ঘটনায় তিনি আদালতের নির্দেশে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করেছেন। এরইমধ্যে মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে থানা পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/এসএস/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
৩ দিনের ছুটিতে কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকের ভিড়
রাজবাড়ীতে হত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার
ফজলুর রহমানের মন্তব্য সরকারের অবস্থান নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
মিয়ানমারে পাচারকালে ৬০০ বস্তা সারসহ আটক ১০
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা