যাত্রাবিরতির দাবিতে রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ, সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি (স্টপেজ) ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শুরু হওয়া এই অবরোধে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসসহ অন্তত চারটি ট্রেন আটকা পড়ে, ফলে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে লাইনের ওপর অবস্থান নেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনটি কার্যত অচল হয়ে আছে। নিয়মিত যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে তারা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির দাবি জানান। পাশাপাশি স্টেশন ভবন ও অবকাঠামো সংস্কারেরও দাবি তোলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন বলেন, “রেলওয়ে স্টেশনটি শত বছরের পুরোনো। সম্প্রতি লাইন সংস্কার করা হলেও শুধু একটি লোকাল ট্রেন ছাড়া আর কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে ১ মে বিক্ষোভ করার পর রেল কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেন থামানোর আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু তারা কথা রাখেনি।”

রেল অবরোধের কারণে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন, সরদহ এবং হরিয়ানে একাধিক ট্রেন আটকে আছে। এর মধ্যে রয়েছে মধুমতি এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি ও মহানন্দা ট্রেন।

সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের যাত্রী সুজন আলী বলেন, “নন্দনগাছী স্টেশনে এসে ট্রেন হঠাৎ থেমে যায়। পরে দেখি, রেললাইনে লাল পতাকা টাঙিয়ে এলাকাবাসী অবরোধ করেছে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।”

অন্য এক যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, “এই ট্রেন খুলনা থেকে রাজশাহীতে আসে, অনেকেই চিকিৎসা ও জরুরি কাজে রাজশাহীতে যান। বগিতে নারী, শিশু ও অসুস্থ যাত্রী রয়েছেন। গরমে তারা খুব কষ্ট পাচ্ছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”

জানা গেছে, ১৯২৯ সালে স্থাপিত নন্দনগাছী রেলস্টেশনটি ২০১৫ সালের শেষদিকে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। একসময় যেখানে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করতেন, এখন কেবল একজন পোর্টার কর্মরত আছেন। প্ল্যাটফর্ম ও ছাউনি থাকলেও সেটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র দুটি লোকাল ট্রেন এখানে থামে।

এলাকাবাসীর দাবি, যাত্রী চাহিদা ও স্টেশনের গুরুত্ব বিবেচনায় নন্দনগাছীতে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশন আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যদি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আন্দোলন আরও জোরালো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/১১ জুন/আরজেড)