সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে এলো খুনির পরিচয়, ধরা পড়ল সেলিম মাতবর

ঝালকাঠির নলছিটিতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর সিআইডির প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তে শনাক্ত হয়েছে অজ্ঞাতনামা এক খুনির পরিচয়। ডিএনএ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে শনাক্ত হওয়া এই আসামিকে ঢাকার ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. সেলিম মাতবর ওরফে রফিক (৪৯)।
মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৭টা ৫০ মিনিটে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার নান্দিকাঠি গ্রামে টোল উত্তোলন নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে ইমরান হাওলাদার (৩২) নামে এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ পাশের একটি কচুরিপানায় ভরা ডোবায় ফেলে দেয় খুনিরা। হামলায় ইমরানের স্ত্রী ফাহিমা বেগম গুরুতর আহত হন।
পরদিন নিহত ইমরানের বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পরপরই সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। এসব আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সিআইডি সদর দপ্তরের ল্যাবে। পরীক্ষায় ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি আলামতে অজ্ঞাতনামা একজন পুরুষের ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়। পরবর্তীতে প্রোফাইল মিলিয়ে বেরিয়ে আসে খুনির পরিচয়—তিনি হলেন মো. সেলিম মাতবর ওরফে রফিক।
পরবর্তীতে সিআইডির এলআইসি শাখা তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি সহায়তায় আসামির অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর একটি চৌকস টিম ২৩ জুন রাজধানীর ডেমরা থানাধীন সারুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সেলিম মাদবরকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডির তথ্য বিশ্লেষণে আরও জানা গেছে, গ্রেপ্তার সেলিম মাদবরের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় দুটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। এছাড়া ঢাকার বাড্ডা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
এদিকে, এই মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি আল আমিন হাওলাদার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তার ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে সিআইডির বিশেষজ্ঞরা। পরবর্তীতে ঘটনার আলামতের সঙ্গে তার ডিএনএরও সম্পূর্ণ মিল পাওয়া যায়।
সিআইডি জানায়, অপরাধ সংঘটনের আলামত থেকে অপরাধী শনাক্ত করতে ডিএনএ প্রযুক্তি এখন একটি কার্যকর হাতিয়ার। এলআইসি শাখা তথ্য ও প্রযুক্তি বিশ্লেষণে আরও দক্ষ হয়ে উঠছে, যাতে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনা যায়।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এলএম)

মন্তব্য করুন