ফকিরাপুলে ডিবি পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ

যশোর থেকে ঢাকার ডেমরা—শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পির ডেরায় মিলল বিপুল অস্ত্র-গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:০০
অ- অ+

রাজধানীর ফকিরাপুলে ডিবি পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় যশোর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ঢাকা থেকে যশোর এবং সেখান থেকে রাজধানীর ডেমরায় ডিবির অভিযানে বেরিয়ে এসেছে এই মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীর ভয়াবহ অপরাধের চিত্র।

ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরায় একটানা অভিযানের পর শনিবার রাত ২টার দিকে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে বাপ্পিসহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তার অপর দু'জন হলেন, বাপ্পির সহযোগী ‘বোমা রিপন’ নামে পরিচিত আবু খালিদ সাইফুল্লাহ এবং মো. কামরুল হাসান। এ সময় বাপ্পির দেহ তল্লাশিতে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ও তার স্বীকারোক্তিতে রাজধানীর ডেমরার একটি আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় আরও দুটি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন ও ১৪৪ রাউন্ড গুলি।

রবিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গত ১৮ জুন রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল থানার ফকিরাপুল এলাকার ডিআইটি এক্সটেনশন রোডে অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ আবদুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। এরপর ১৯ জুন রাত সোয়া ১২টার দিকে মাদকসহ আটক আবদুর রহমানের দেওয়া তথ্যে পল্টন থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার থামাতে নির্দেশনা দেন ডিবি সদস্যরা। এরপর প্রাইভেটকারে থাকা মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের তল্লাশি ও গ্রেপ্তারকালে শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি ডিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান। এরপর তাকে গ্রেফতার করতে ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

গোপন সংবাদে জানা যায়, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাপ্পি যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান নেন। সেখানে নজরুলের জামাতা আবু খালিদ সাইফুল্লাহ, বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাপ্পি বাসায় থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দেন। বাসায় গ্যাস জমাট করে পুলিশকে হুমকি দেন যে, যদি তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয় তাহলে বাসায় থাকা শিশু ও নারীদের হত্যা করবেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় বাসার গ্যাস অপসারণ করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তার দেওয়া তথ্যে গতকাল শনিবার রাজধানীর ডেমরা থানার বসতবাড়ি আবাসিক এলাকায় বাপ্পির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ভর্তি ৪টি ম্যাগাজিনসহ মোট ১৫১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।

যুগ্ম কমিশনার নাসির আরও বলেন, বাপ্পির গ্রুপের সদস্য ২৫ জন। ২০১০ সাল থেকে বাপ্পি মাদক বিক্রি করে আসছেন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। পাশাপাশি তার গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

তিনি বলেন, অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে বাপ্পি গোয়েন্দা পুলিশকে বেশ কিছু ব্যক্তির নাম জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কাজ করছি। মাদক-অস্ত্রের রুট সম্পর্কে আমরা কাজ করছি।

বাপ্পির মাদক কারবার চক্রে অন্তত ২৫ জন সদস্য রয়েছেন। গত কোরবানির ঈদে তাদের অন্তত সাত লাখ টাকা সালামি দিয়েছেন বাপ্পি। এমন একটি তালিকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মাদক কারবারি হয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলির মজুতের বিষয় জানতে চাইলে ডিবির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাপ্পির কাছ থেকে ৪টি বিদেশি পিস্তল ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো বেশ দামি। অস্ত্র-গুলি মজুতের বিষয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি মাদক কারবারের পাশাপাশি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেওয়াসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে আসছিলেন। এসব কাজে অস্ত্রগুলো মজুত করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৯জুন/এলএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পরীক্ষা দিতে গিয়ে নিখোঁজ সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী পুলি, থানায় জিডি
আমেরিকায় গিয়েই ‘নিরুদ্দেশ’, সরিয়ে দেওয়া হলো গুলশানের সেই ওসিকে
স্ত্রী তালাক দেওয়ায় এক মণ দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী
বাংলাদেশের কাছে ৭-০ গোলে হেরেছে বাহরাইন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা