বইঃ আমার কথা
বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া
সৈয়দ আবুল হোসেন বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘আমার কথা’। এই বইয়ে তিনি নিজের চিন্তা, কর্মকাণ্ড, মূল্যবোধ, নানা অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে লিখেছেন। এটি পড়লে তাকে যারা পুরোপুরি চিনেন না তাদের সুবিধা হবে। বইটি ‘ঢাকাটাইমস২৪ডটকম’ ধারাবাহিকভাবে ছাপছে। বইটির আজকের পর্বে থাকছে- ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’
মহানবি (সা.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হলে সুদূর চীন দেশে যাও। তিনি কেন চীনের কথা বলেছিলেন? এ নিয়ে অনেকে অনেক ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। চীন পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম পাদপীঠ। চীনের জনগণ যেমন কর্মঠ, তেমনি দূরদর্শী। বিশাল আয়তনের ভূখ- চীনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সীমাহীন বৈচিত্র্য পুরো পৃথিবীর সারসংক্ষেপ যেন। আমি চীনে ছাত্র হিসাবে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়ন করিনি। তবে ব্যবসার সূত্রে চীনের সাথে আমার একটা গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুবাদে চীন, চীনের মানুষ, প্রকৃতি এবং বিশাল বৈচিত্র্যময় প্রাসঙ্গিকতা আমাকে যা শিখিয়েছে, যা দিয়েছে- তা কখনও পরিমাপযোগ্য নয়।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমার ব্যাপক যোগাযোগ ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন আমি দক্ষতার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করি। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ব্যবসার কারণে আমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিল প্রসারিত। দিন দিন তা আরও পরিব্যাপ্ত হয়। প্রতিবছর আমি ষাটের অধিক বৈদেশিক আমন্ত্রণ পেতাম; তবে যেতাম দুই-একটায়। মন্ত্রী হওয়ার পর বিদেশ ভ্রমণ আরও কমিয়ে দিই। যোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সাড়ে তিন বছর সময়ে আমি ২১ বার বিদেশ গিয়েছি। তন্মধ্যে দুটি ছাড়া আর বাকিগুলো আমার নিজস্ব অর্থে। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ব্যবসায় উপলক্ষে আমার বিদেশ ভ্রমণ শুরু। এরপর আমার জন্য বিশ্বটাই হয়ে ওঠে একটা বিচরণক্ষেত্র। যাই হোক, এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলব না, শুধু বোয়াও ফোরাম সম্পর্কে কিছু বলব। কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফোরাম, তবে অনেকে এ বিষয়ে তেমন জানেন না।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’র সাথে জড়িত ছিলাম। ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে আমি চেয়ারপারসন হিসাবে দায়িত্ব পালন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সুযোগ লাভ করি। বাংলাদেশে কেবল আমিই এ সুযোগ লাভের অধিকারী। এ সুযোগ আমাকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে ব্যাপকভাবে পরিচিত করে তোলে। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের যুগে এ ফোরামটি ইতোমধ্যে একটি কার্যকর ফোরাম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
এ ফোরাম গঠনের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (অ্যাপেক), অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) + চীন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া (১০ + ৩), ডেভোস ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামসহ বহু আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক ফোরাম এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনীতির ক্ষেত্রে অবদান রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এসব আঞ্চলিক বা উপ-আঞ্চলিক ফোরাম সীমিত গণ্ডির মধ্য থেকে কাজ করে যাচ্ছে। এসব থেকে আলাদা কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে বৃহত্তর পরিসরে এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এশিয়ার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’ গঠন করা হয়।
চীন তার দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে চায়। এ লক্ষ্যে এশিয়ার দেশগুলোতে চীন তাদের আর্থনীতিক কর্মকা-কে আরও সুসংগঠিতভাবে সম্প্রসারিত করার তাগিদ অনুভব করে। এজন্য প্রয়োজন পারস্পরিক আর্থনীতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। এমনি এক বাস্তবতা থেকে চীন-অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার ২৬টি দেশ এশিয়ান ফোরাম গঠনের উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়। মূলত ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ভি. রামোস, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মরিহিতো হোসাকাওয়া একটি কার্যকর এশিয়ান ফোরাম গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। চীনের আন্তর্জাতিক মর্যাদা, সম্ভাবনা এবং হাইনান প্রদেশের অপরূপ সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোক্তরা ‘বোয়াও’ নামক স্থানে এ ফোরামের প্রধান কার্যালয় স্থাপনের জন্য নির্ধারণ করেন। ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের তিন সাবেক রাষ্ট্রনায়কের কাছ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই চীন তা সাদরে গ্রহণ করে। হাইনান প্রদেশের নৈসাঙ্গিক স্থান ‘বোয়াও’-এর নামানুসারে গঠিত এ আন্তর্জাতিক সংগঠনটির নাম রাখা হয় ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’। অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার ২৬টি দেশ এ ফোরামের সদস্য। বাংলাদেশ, চীন, জাপান, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল এ ফোরামের সদস্য। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ থেকে এ ফোরামের প্রধান প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য চীন সরকার আমাকে মনোনীত করে। এরপর থেকে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিটি সম্মেলনে আমি বাংলাদেশের পক্ষে প্রধান ও স্থায়ী প্রতিনিধির ভূমিকা পালন করে আসছি।
২০০১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও এলাকায় শুরু হয় দুইদিনব্যাপী ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র প্রথম সম্মেলন। এ উপলক্ষে বোয়াও সাজে বর্ণাঢ্য সাজে। অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার ২৬টি দেশের সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানসহ প্রায় দুই হাজার প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দেন। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়োসোহিরো নাকাসোনে, ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ভি. রামোস, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক, কাজাখিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সের্গেই টেরেক সেনকো, মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পুনসালমা অরকিরবাট, চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহথির বিন মোহাম্মদ, নেপালের প্রয়াত রাজা বীর বিক্রম শাহ দেব, ভিয়েতনামের উপ-প্রধানমন্ত্রী নওয়েন মান ক্যাম। তাঁরা সবাই সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের বহু রাজনীতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনান সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে অভিনন্দনবার্তা পাঠান।
বাংলাদেশ থেকে আমিসহ কয়েকজন রাজনীতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে যোগদান করি। এ সম্মেলনে আমাকে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র প্রধান বাংলাদেশ প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়। এশিয়ার বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতি গোটা সম্মেলনকে প্রাণবন্ত করে তোলে। এশিয়ার নেতৃবৃন্দ আর্থনীতিক অগ্রগতির স্বার্থে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অধিকাংশ নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে ফোরাম গঠনের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য প্রকাশ পায়।
ফোরাম গঠনের উদ্যোক্তাদেরই একজন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ভি. রামোস। তিনি ফোরাম গঠনের যৌক্তিকতা সম্পর্কে বলেন, ‘‘এটা সত্য যে এশিয়াতে অনেক ফোরাম রয়েছে। কিন্তু তাদের কেউই এশিয়ার মেধা ও কূটনীতিক অভিজ্ঞতার সমাবেশ ঘটাতে পারেনি যেটা আমরা এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঘটাতে পেরেছি।” চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন বলেছিলেন, এ ফোরাম আর্থনীতিক বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে সংলাপ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে একটি অভিন্ন উন্নয়নে এশিয়ার দেশগুলোর আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। কফি আনান তাঁর বাণীতে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র ভূমিকা সম্পর্কে উঁচু ধারণা পোষণ করে লিখেছিলেন, ‘যে সকল নেতা এ ফোরামের সাথে যুক্ত রয়েছেন তাঁদের সম্মিলিত প্রয়াস শুধু এশিয়াকে নয়, সমগ্র বিশ্বকে উপকৃত করবে।’ এ সম্মেলনেই গৃহীত হয় ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র চার্টার। ঘোষণা (ডিক্লারেশন) অনুয়ায়ী প্রতিবছর ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম বার্ষিক সম্মেলন হয় ২০০২ খ্রিস্টাব্দের ১২-১৩ এপ্রিল।
‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-এর বার্ষিক সম্মেলন ছাড়াও সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে চীনের গুইলিনে পর্যটন সম্মেলন এবং তেহরানে জ্বালানি বিষয়ক সম্মেলন উল্লেখযোগ্য। চীনের গুইলিনে অনুষ্ঠিত পর্যটন সম্মেলনে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-র স্পোক্স্ পার্সন হিসাবে বাংলাদেশ থেকে আমি যোগদান করি। ২০০২ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের সমাপ্তি অধিবেশনে আমাকে সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করার বিরল মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। এ সম্মেলনের সভাপতি হিসাবে আমার ভূমিকা ও কার্যক্রম চীনসহ ২৬টি সদস্য রাষ্ট্রের পত্র-পত্রিকায় উচ্চ প্রশংসাসহ প্রকাশিত হয়।
১৯ নভেম্বর, ২০০২ খ্রিস্টাব্দে ২৬টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে ‘গুইলিন ঘোষণা ২০০২’ গৃহীত হয়। অন্যান্যের মধ্যে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. ঝ্যাং সিয়াং এ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া, চায়না ন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং এশিয়া কো-অপারেশেন ডায়ালগ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এশিয়ার ২৬টি দেশের পর্যটনমন্ত্রীসহ ৫ শতাধিক প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বোয়াও ফোরামের স্পোক্স্ পার্সন এবং মাস্টার অব সেরিমনি হিসাবে আমি ১৯ নভেম্বর গুইলিন ঘোষণা-২০০২ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হওয়ার পর দুটি পৃথক প্রেস কনফারেন্সে ট্যুরিজম সম্মেলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরি। এ সময় আমাকে সহায়তা করেন চায়না ন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভাইস মিনিস্টার মি. সান গ্যাং, বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইয়াও ওয়াং এবং গুইলিন মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট-এর ভাইস মেয়র প্যান জিয়ানমিং।
‘গুইলিন ঘোষণা-২০০২’ উপস্থাপনকালে চায়না ন্যাশনাল ট্যুরিজম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান মি. হি গুয়াংওয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে ভ্রমণকারীদের অবাধ চলাফেরা নিশ্চিত করার জন্য আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিকভাবে বিদ্যমান সকল ধরনের বাধা অপসারণের আহ্বান জানান। সমাপনী ভাষণে আমি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলাম তা এখনও মনে আছে : “পর্যটন থেকে সর্বোচ্চ সামাজিক এবং আর্থনীতিক সুবিধা আদায়ের জন্য পর্যটনশিল্প এবং পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। আর কোনো বিষয় যাতে পরিবেশের ক্ষেত্রে পর্যটনশিল্পখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে, সেজন্য দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পর্যটনব্যবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক। পর্যটন হলো একটি তথ্যনির্ভর শিল্প। সেজন্য তথ্যের আদান-প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ট্যুরিস্টদের আকৃষ্ট করে পর্যটনশিল্পের ব্যাপক বিকাশ সাধন করা সম্ভব। পর্যটনশিল্পে গতিশীলতা আনয়ন এবং এ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার জন্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো, ট্যুরিস্ট পণ্য উন্নয়ন এবং ট্যুরিজম সার্ভিসের আরও উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।” বিকেলে রাউন্ড টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন অংশগ্রহণ করেন। শেষ দিনে ২৬টি দেশের অতিথিদের সম্মানে চীনের লী জিয়াং নদীভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ এপ্রিল আমার স্মরণীয় দিনসমূহের একটি। এ দিন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার ২৬টি দেশের বর্তমান এবং সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদরা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আর্থনীতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্য নিয়ে চীনের হাইনান দ্বীপে সমবেত হন। ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’ আয়োজিত হাইনানে সোফিটাল বোয়াওতে চারদিনব্যাপী এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান চিয়া ছিং লিং। বোয়াও ফোরামের প্রধান বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসাবে আমাকে ২৫ এপ্রিল ‘আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীদের সামাজিক দায়িত্ব’ শীর্ষক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার জন্য মনোনীত করা হয়। এটি ছিল বাংলাদেশের পক্ষে একটি বিরল সম্মানের বিষয়।
এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ১ হাজার প্রতিনিধি এ সম্মেলনে যোগ দেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা এ সম্মেলনে যোগদান করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন- মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতকু আবদুল্লাহ আহমেদ বাদাবি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান ইউ, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক, নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র, ইউরোপিয়ান কমিশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোমানো প্রোদি, পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক লেঘোরি প্রমুখ। ২০টি অধিবেশনে বিভক্ত এ সম্মেলনের প্রথম প্লানারি সেশনে ২৩ এপ্রিল তিনটি বিষয় উত্থাপন করা হয়। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের যুগে এশিয়ার ভূমিকা, সুনামি-পরবর্তী পুনর্গঠন ও এশিয়ার আর্থনীতিক উন্নয়ন এবং এশিয়ার সামাজিক উন্নয়নে খাপ খাওয়ানো- শীর্ষক তিনটি বিষয়বস্তুর ওপর মুখ্য আলোচক ছিলেন চীনের পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান চিয়া ছিং লিং, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আহমেদ বাদাবি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড, সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী লি কুয়ান ইউ, নেপালি কাউন্সিল অব মিনিস্টার ও এর ভাইস চেয়ারম্যান কীর্তি নিধি বিসতা। এর আগে ২২ এপ্রিল আমি সম্মেলনে আগত ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ভি.রামোস, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক, সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ, মালয়েশিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতোস মুসা বিন হিতাম ও শ্রীলংকার দক্ষিণ অঞ্চলের গভর্নর কিংসলে উইক্রামারাতনে এবং চীনের পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান চিয়া ছিং লিং-এর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আলোচনায় আমি বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সবার আগ্রহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হই, যার সুফল এখন বাংলাদেশ ভোগ করছে।
২৪ এপ্রিল “ইকোনমিক গ্রোথ অ্যান্ড এন্ট্রিপ্রিউনিয়ারস সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটিস এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন লেবার অ্যান্ড চ্যারিটি” শীর্ষক সেমিনারে আমি সভাপতিত্ব করি। সেমিনারে এশিয়ার দেশগুলোতে আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এশিয়ার দেশগুলো আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে যেভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা অতীতে আর কখনও দেখা যায়নি। অথচ সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে দেখা যায়, আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে গিয়ে পরিবেশকে বিনষ্ট করা হয়। এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোর উন্নয়নের ফর্মূলা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। সেমিনারে বক্তারা বলেন, আমাদের সামনে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ। ধনী এবং দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে, দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসায়ীদের যথাযথ ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইউপিএস এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের সভাপতি কেনেথ আর্থার তোরক, এনওয়াইকে চেয়ারম্যান এবং ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-এর বোর্ড অব ডিরেক্টর জিরো নেমেটো প্রমুখ।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৬ এপ্রিল। চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াওতে বিএফএ-এর উদ্যোগে দুইদিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামের সদস্যভুক্ত দেশের প্রায় ১ হাজার প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্বের কয়েকটি দেশের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। দুইদিন পরিব্যাপ্ত এ সম্মেলনকে চারটি অধিবেশনে বিভক্ত করা হয়। বিশ্বনেতৃবৃন্দের মধ্যে যাঁরা এ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মীর জাফরুল্লাহ খান জামালি, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামদেদুন সেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ভি. রামোস,
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক, নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিরতি নিধি বিসতা এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ খান লেঘারি।
“এশিয়ার সংস্কৃতির মূলমন্ত্র হবে মানুষে মানুষে সাহচর্য, সমঝোতা, একে অপরের প্রতি সমবেদনা, মানুষের প্রতি ভালবাসা, সৌহার্দ্য, শান্তি ও সম্প্রীতি।”
অধিবেশনের শেষ দিনে ‘এশিয়ান কালচারাল এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কো-অপারেশন’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এ বৈঠকে সভাপতি হিসাবে বৈঠক পরিচালনা ছাড়াও আমাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। বৈঠকে আমি এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানোর পাশাপাশি সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। আমি আমার বক্তব্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়, পারস্পরিক সহযোগিতা, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের মাধ্যমে বিশ্বায়নকে পরিপূর্ণভাবে সার্থক করে তোলার ওপর গুরুত্ব দিই। সেদিন আমি বলেছিলাম : “সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার মাধ্যমে ব্যক্তি এবং জাতি সমৃদ্ধ হয়। সংস্কৃতি-সমৃদ্ধ এশিয়ার দেশগুলো প্রতিনিয়ত তা বিনিময়ের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমান শতক শুধু আর্থনীতিক বিশ্বায়নের শতকই নয়, এটি সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নের যুগ। এশিয়ার সংস্কৃতির মূলমন্ত্র হবে মানুষে মানুষে সাহচর্য, সমঝোতা, একে অপরের প্রতি সমবেদনা, মানুষের প্রতি ভালবাসা, সৌহার্দ্য, শান্তি ও সম্প্রীতি। এশিয়ার মানুষের কাছে এ মন্ত্র পৌঁছে দেওয়া আজ বড় বেশি প্রয়োজন।”
১৬ জুলাই, ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে তেহরানে জ্বালানি বিষয়ক দুই দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের বিষয়বস্তু ‘জ্বালানি এবং টেকসই আর্থনীতিক উন্নয়ন’। এ সেমিনারের অন্যতম আয়োজক ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-এর পক্ষ থেকে আমাকে পূর্ব থেকে সেমিনারের শেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার অনুরোধ জানিয়ে পত্র পাঠানো হয়। আমি অনুরোধে সম্মতি প্রকাশ করি। ইরানের জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় এবং ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
১৭ জুলাই দুইদিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে ‘জ্বালানি এবং টেকসই আর্থনীতিক উন্নয়ন’ বিষয়ক সেমিনারে আমি সভাপতি হিসাবে বক্তব্য রাখি। এ সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইরানের জ্বালানি উপমন্ত্রী ড. আমরোলাহি, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ড. অরডেকোনিয়ান এবং আহমদিয়ান চায়না একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক ঝাই গুয়াংমিন। এ সম্মেলনে বক্তারা ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা পূরণে বিশ্বকে জ্বালানি খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, আর্থনীতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে জ্বালানি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে। সেমিনারে বক্তারা এশিয়ার দেশগুলোতে জ্বালানি চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য ব্যবসায়-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, জ্বালানি সমস্যা সমাধানে এ মুহূর্তে এশিয়াব্যাপী একটি স্বচ্ছ এবং উন্মুক্ত জ্বালানি বাজার সৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে। আর্থনীতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য এবং টেকসই পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য জ্বালানি সক্ষম প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে এবং খনিজ সম্পদ আহরণে পরিবেশগত উন্নয়ন এবং পুনরুজ্জীবিত জ্বালানি প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, স্থানীয় পরিবেশ দূষণ এবং বিশ্ব-পরিবেশগত সমস্যা যেমন এসিড বৃষ্টির মতো সমস্যার উদ্ভব না ঘটায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একমাত্র ভূগর্ভস্থ জ্বালানির ওপর বর্তমান নির্ভরতা কমাতে হবে। জ্বালানি ব্যবহার ও সংগ্রহে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া পরিহার করার কৌশল আবিষ্কারে উদ্যোগ নিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে জ্বালানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে প্রথম অধিবেশনে ইরানের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ড. আদেলি, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী জানজেনেহ, বোয়াও ফোরামের মহাসচিব ইয়ং টু লং এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বব হক বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
২০১৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে চীনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’-এর বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্দেশ্য- এশিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা। তার নাম দেওয়া হয় এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেষ্টমেন্ট ব্যাংক- এআইআইবি। মূলত এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্যই শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখানে অংশগ্রহণ করেছিল বিশ্বের ৩০টি দেশের বিশেষজ্ঞ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তবে বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ-এর মতো ব্যাংকের কোনো প্রতিনিধিকে এ সম্মেলনে ডাকা হয়নি। বস্তুত তাদের একচেটিয়া আধিপত্যকে খর্ব করার জন্যই এ ব্যাংক গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে চীন। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ তাঁদের সৃষ্টিশীল চিন্তা-চেতনাকে উপস্থাপন করেছেন। আলোচনা হয়েছে- কীভাবে নিজ নিজ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারের সেবাসমূহ আরও ইতিবাচক, কার্যকর এবং জনবান্ধব করা সম্ভব।
এ শীর্ষ সম্মেলনের একটি সেশন আমি মডারেট করি। প্রশ্ন-উত্তর পর্বেও আমি অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ ও উত্তেজনামূলক নানা আলোচনা হয়েছে। এখানে মুক্ত আলোচনার জন্য ছিল নানাবিধ বিষয়। ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব, সফলতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন- কোনোটাই বাদ পড়েনি। গুরুত্বপূর্ণ ধারণার সীমা-পরিসীমা নির্ধারণ করার জন্য ছিল বহু মুহূর্ত। যেখানে জাতির জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা-চেতনা ও দর্শন। এ সম্মেলন আমাকে অনেক বিষয়ে উপলব্ধি করতে ও ভাবতে শেখায়, যা আমাকে বইটি রচনায় উদ্বুদ্ধ করে।
‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া’র যে বর্ণনা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমার কাজের একটি খণ্ডিত চিত্র মাত্র। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আমি নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
আগামীকাল কাল থাকছে - “ ‘অসম্ভব’ : একটি ভৌতিক শব্দ” আরও পড়ুন -‘ক্যারিয়ার গঠনে প্রতিযোগিতা’ ঝুঁকি বনাম সাফল্য, ভিশন-২০২১, ‘সৃজনশীলতা’ ‘বিনিয়োগ’, ‘বাংলার বসন্ত’, ‘সময়, শ্রম ও অধ্যবসায়’ ‘আমার আদর্শ আমার নায়ক’ , ‘ধৈর্য পরীক্ষা’, ‘খেলাধুলা ও বাংলাদেশ’ ‘অধ্যয়ন, লেখালেখি ও নেতৃত্ব’ ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশ’, ‘সাফল্যের স্বর্ণদ্বার’ , ‘ঐক্যবদ্ধ শক্তি সাফল্যের মেরুদণ্ড’ ‘পদ্মা সেতু’, `বিজয়চিহ্ন 'V' প্রকাশে ভিন্নতা', ‘উন্নয়ন ও অগ্রাধিকার’ , ‘ইতিবাচক ভাবনা সাফল্যের চাবিকাঠি’ , ‘ভবিষ্যতের সরকার কেমন হবে’ ‘মাতৃভাষার প্রতি মমতা’, ‘সুখ ও শান্তি : আমাদের করণীয়’ , ‘নেতৃত্বের শক্তি’, ‘আদর্শ জীবন গঠনে মূল্যবোধ’, ‘আমার প্রাত্যহিক জীবন’, 'আমার অনুভব'।
মন্তব্য করুন