কুয়াকাটা হবে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র: অর্থমন্ত্রী

এসকে রঞ্জন, কলাপাড়া থেকে
| আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০১৭, ১৯:৩৮ | প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারি ২০১৭, ১৯:৩৪

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাকে আকর্ষণীয় ও বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। ইতোমধ্যে কুয়াকাটাকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কক্সবাজারের উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে যেসব সমস্যা ছিল সে ধরনের সমস্যা কুয়াকাটায় নেই। ইতোমধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রটির পরিকল্পিত উন্নয়ন শুরু হয়েছে।’

শনিবার কুয়াকাটা মেগা বিচ কার্নিভাল ২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবিষ্কার।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ভাগ্যবান। এখনো কুয়াকাটায় লগ্নিকারকদের তেমন ভিড় হয়নি। এখানে উন্নয়ন করা সহজ হবে।’

পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চেয়ারম্যান এসএম গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে শনিবার দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত সভায় অর্থমন্ত্রী মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে কাজ করার জন্য স্থানীয় সরকারসহ জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। কুয়াকাটার যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি প্রয়োজন উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক, নৌ কিংবা রেলপথ যাই হোক না কেন যোগাযোগটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বিচ এবং বন্দর এরিয়া কাছাকাছি হওয়ায় কুয়াকাটার মানুষ ভাগ্যবান। সবচেয়ে গভীরতর বন্দর হচ্ছে পায়রা।’

বর্তমান সরকারের মেয়াদ আরও দুই বছর বাকি রয়েছে। এসময়কে তিনি গোল্ডেন টাইম উল্লেখ করে বলেন, ‘এসময়ে আমাদের দেয়া অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কুয়াকাটাকে আকর্ষনীয় এবং বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। পরিকল্পনার সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে পারলে এটি আরও কার্যকর হয়।’ তিনি পরোক্ষভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আগুন জ্বলালানো কিংবা যখন-তখন ধর্মঘট ডাকায় মাঝে-মধ্যে বাধা আসে। তখন উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। স্থিতিশীল রাজনীতি থাকলে আগামী দুই বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে পৌঁছাবে। দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে ২২ শতাংশে নিয়ে আসা হয়েছে।’

দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা সাড়ে তিন কোটি মানুষকে বের করে আনতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব মানুষ বেশি লেখাপড়া না জানলেও বুদ্ধিমান। তাদের কাছে প্রযুক্তি পৌঁছে দিলেই তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারছে। দেশের কৃষি জমি কমলেও খাদ্য উৎপাদন ১১০ লাখ টন থেকে ৩৮০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। দেশের মানুষ উদ্ভাবনশীল বুদ্ধিতে দীপ্ত।’

মুহিত বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সমুদ্র তীরের মানুষের জন্য আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন।’

বিশেষ অতিথি বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা পেয়েছে। কুয়াকাটায় আগামীতে ওসান ট্যুরিজম চালু করা হবে। সেই লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মৌলবাদ উত্থান বন্ধে সরকার সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।’ প্রতি বছর কুয়াকাটায় বিচ কার্নিভাল বলেও জানান মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আসম ফিরোজ এমপি, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান এমপি, শওকত হাসানুর রহমান এমপি, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, এলজিআরডি সচিব আব্দুল মালেক, পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান মোশাররফ হোসেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস, বরিশালের ডিআইজি শেখ মো. মারুফ হাসান (বিপিএম বার), কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা প্রমুখ।

এসময় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক একেএম শামীমুল হক সিদ্দিকী, কলাপাড়ার ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমানসহ পটুয়াখালী ও বরগুনার বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যানগণ, পৌরসভার মেয়রসহ সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মেগা বিচ কার্নিভাল ২০১৭ উপলক্ষে কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিম দিকে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। তিন দিনের এ অনুষ্ঠানে রয়েছে প্রতিদিন ওয়াটার বাইক, ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি, দাঁড়িয়াবান্দা, ভলিবল, এটিভি রাইডস, বোট বোয়িং, বিচ লাইটিং, ক্যাম্প ফায়ার, সমুদ্র পথে কুয়াকাটার সঙ্গে ফাতড়া, সুন্দরবন, সোনার চর, হরিণ খোলা, কটকা ও করমজলের সী-ক্রুজিং। রয়েছে রাখাইনদের পিঠেপুলি ও তাদের বুনন হস্তশিল্পের প্রদর্শনী। থাকবে লাঠিখেলাসহ বর্ণাঢ্য ঘুড়ি উৎসব ও স্থানীয় শিল্পীদের উপস্থাপনাসহ দেশের লোক সংগীতের স্বনামধন্য সঙ্গীত শিল্পীর সঙ্গীত ও ব্যান্ড শিল্পীর সঙ্গীত পরিবেশনাসহ তিন দিনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

কুয়াকাটার প্রবেশদ্বারসহ বিচের ছয় কিলোমিটার এলাকা আলোকসজ্জা করার কথা বলা রয়েছে। কিন্তু মাত্র এক বর্গকিলোমিটার নামকাওয়াস্তে আলোকসজ্জা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমাহীন সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে কার্নিভাল কুয়াকাটা ২০১৭ উদযাপনে। কলাপাড়া কুয়াকাটা মহাসড়কের শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল সেতুসহ গোটা এলাকা ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে সাজানোর কথা থাকলেও নামকাওয়াস্তে স্বল্পপরিসরে ব্যানার-ফেস্টুন ঝুলানো হয়েছে। শেখ রাসেল সেতুর অধিকাংশ ফেস্টুন বাঁশসহ নিচে পড়ে আছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জলবায়ু ঝুঁকি হতে সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী

গাজায় ত্রাণ কনভয়ে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ

শ্রম আইন সংশোধনে তিন দিনের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে: আইনমন্ত্রী

অভিবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নে মাইগ্রেশন কো-অর্ডিনেশন কমিটি হচ্ছে: প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী

গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড দেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে: টিআইবি

৭ জুন শুরু হচ্ছে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন’, রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন

ঢাকায় পৌঁছেছেন ডোনাল্ড লু

সাত জেলায় বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ 

হজ পালনে সৌদি আরব গেছেন ১৫ হাজার ৫১৫ বাংলাদেশি

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা আসছেন আজ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :