দিনভর উত্তেজনা, দৃষ্টি এখন টাউন হলে
একাধিক কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। কুমিল্লার বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তন (টাউন হল) থেকে ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই প্রধান দলের কর্মী সমর্থক ও সংবাদ কর্মীরা এখন সেখানে আসতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে এক যোগে ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। সকাল থেকে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে এসে ভোট দেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কিন্তু বেলা ১২টার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
জাল ভোট দেয়া ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র এবং ২১ নং ওয়ার্ডের সরকারি সিটি কলেজের পুরুষ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেয়া হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন, ‘গোলযোগের কারণে দুইটি ভোট কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। যেসব জায়গায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে সেখানে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন কার্যজকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
বিএনপির প্রার্থী সাক্কুর অভিযোগ, নৌকা সমর্থকরা কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবিহিত করা হলেও তারা কার্যিকর কোনো পদক্ষেপগ্রহণ করেনি।
অবশ্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই সকল কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কেউ অনিয়মের অভিযোগ করলে তাকে সুনির্দিষ্টভাবে বলতে হবে, কোথায়, কখন, কীভাবে ভোট জালিয়াতি হয়েছে।’
এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রোকন উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘এমন ঘটনা আমিও শুনেছি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।’
দ্বিতীয়বারের অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন চারজন। সাবেক মেয়র ও বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা ছাড়া আরো দুই প্রার্থী হলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) শিরিন আখতার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন ১১৪ ও সংরক্ষিত কাউন্সিল প্রার্থী ৪১ জন।
সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন। এরমধ্যে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। ওই সিটিতে নারী ভোটারের সংখ্যা একলাখ পাঁচ হাজার ৪৪৭ জন এবং পুরুষ ভোটারের সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার ১১৯ জন।
২০১১ সালে দুটি পৌরসভাকে এক করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয়। এর পরের বছরই হয় সিটির প্রথম নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে মনিরুল হক সাক্কু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আফজল খানকে বড় ব্যবধানে হারান।
ওই নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে লড়েছিলেন আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি বিলুপ্ত পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। এবার সাক্কুকে হারাতে তার ওপরই ভরসা রেখেছে আওয়ামী লীগ।
(ঢাকাটাইমস/ ৩০ মার্চ/ এমএ/ডব্লিউবি)