কুমিল্লায় অভিযান: ‘জঙ্গি’ আনাছ ও রনির খোঁজে
কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকায় যে বাড়িকে ঘিরে গত তিন দিন ধরে উত্তেজনা, সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে আনাছ ও রনি নামে দুইজন ছিলেন এবং তারা বুধবার বিকালে পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করার আগেই সেখান থেকে চলে যায় বলে জানিয়েছে বাহিনীটি। চট্টগ্রামের মিরসরাই আস্তানা থেকে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে এই দুই জনের বিষয়ে তথ্য জানা যায়। এদের ছবিও আছে পুলিশের কাছে। এই ছবি প্রকাশ করবে তারা।
কোটবাড়িতে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা তল্লাশি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম এ কথা জানান। গত বুধবার থেকে ঘেরাও করে রাখা বাড়িটিতে শুক্রবার সকালে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সকালে অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি গুলি করে বাড়িটির কাছে গেলেও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বাড়িটির দেয়াল ছিদ্র করে গ্যাস দেয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর বিকালের দিকে বাড়িটিতে ঢুকে পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু তিন তলা বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়েও আনাছ বা রনি-কাউকে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি জানান, বাড়িটিতে তারা বেশ কয়েকটি বোমা পেয়েছেন। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করেও তা পারা যায়নি। কারণ অভিযানের আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সেখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিল। আবার গ্যাসের কারণে সেখানে টেকা যাচ্ছিল না। এই আস্তানায় পাওয়া বোমাগুলো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড আস্তানায় বিস্ফোরণ ঘটানো বোমার মত বলেও জানান তিনি।
শনিবার বাড়িটিতে আবার অভিযান চালানো হবে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তারা আশা করছেন ততক্ষণে গ্যাসের প্রভাব কেটে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভেতরে যে বোমাগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোর একেকটি পাঁচ কেজির মত ওজন। কিন্তু সেগুলো বাইরে আনা সম্ভব নয়। কাল ভেতরেই বিস্ফোরণ ঘটনো হবে। এরপর বাড়িটিতে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তারা যে দুই জনের খোঁজে সেখানে গিয়েছিলেন তাদের একজনের নাম আনাছ বা আনিস। তার বয়স ১৯ থেকে ২০, বাড়ি নোয়াখালী এলাকায়। তিনি গত পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। আর অন্য জনের নাম রনি। তার বয়স ২২ থেকে ২৩। তিনি জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য ছিলেন। এরপর নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। রনিও গত পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহী এলাকায়।
এই দুই জনের ছবি পাওয়া গেছে জানিয়ে চট্টগ্রামের ডিআইজি জানান, ‘পরে ছবি সাপ্লাই করবো। যাতে তাদেরকে মানুষ শনাক্ত করতে পারে।’
এই দুই জনের বিষয়ে কীভাবে তথ্য পাওয়া গেল-জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ৮ মার্চ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানা থেকে আটকদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে এই দুইজনের বিষয়ে। ঢাকা থেকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা কুমিল্লায় আসার পর বাড়িটি শনাক্ত করতে করতে বিকাল হয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই এই দুই জন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রামের ডিআইজি বলেন, ‘আমরা বাড়ির মালিক দেলোয়ারের সঙ্গে কথা বলি। তিনি জানান, সকাল ১০টার দিকে তিনি বের হওয়ার সময় আনাছ বের হয়ে যায় আর অন্যজনকে তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে বের হয়েছেন। তবে বিকালের আগেই সেও বেড়িয়ে গেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তারা বাড়ির দরজাটি খোলা অবস্থায় পেয়েছেন।
ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন