আরও দুই বছর সিডিএ চেয়ারম্যান থাকছেন ছালাম
আট বছর ধরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আবদুচ ছালাম সময় পেলেও আরও দুই বছরের জন্য। তার চুক্তিভিত্তিক চাকরির মেয়াদ পঞ্চমবারের মত বাড়িয়েছে সরকার। সিডিএ চেয়ারম্যানের পাশাপাশি নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষও ছালাম।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আফসারী খানম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।
ছালামের পদের মেয়াদ শেষ হয় ২৩ এপ্রিল। পরদিন জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে তাকে ওই দিন থেকেই আবার নিয়োগের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ সালামের চুক্তির মেয়াদ পূর্বের ধারাবাহিকতায় ২৩ এপ্রিল ২০১৭ থেকে অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য বাড়ানো হল।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পূর্বের চুক্তির শর্তাবলী অপরিবর্তিত রেখে পুনরায় চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।’
২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল প্রথমবারের মতো সিডিএ চেয়ারম্যান পদে আসেন ছালাম। তিনিই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়া প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তি।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাত ধরে নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি সক্রিয় হওয়া ছালাম ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ওয়েল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৬ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদে আছেন তিনি।
বর্তমান সরকারের আমলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে অবকাঠামোগত বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলছে সিডিএর তত্ত্বাবধানেই। আর এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আবদুচ ছালামের প্রতিই আস্থা রাখছে সরকার।
২০১৪ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার নির্মিত হয় সিডিএর তত্ত্বাবধানে।
বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারও নির্মিত হয়েছে সিডিএর তত্ত্বাবধানে। ফ্লাইওভারটি নির্মাণের সময় ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর গার্ডার ধসে ১৩ জনের মৃত্যু হলে সমালোচনার মুখে পড়েন সিডিএ চেয়ারম্যান।
নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার ফ্লাইওভারটিও নির্মিত হয়েছে সিডিএর তত্ত্বাবধানে। বর্তমানে কদমতলী এলাকাতেও আরও একটি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলছে।
ছালামের তত্ত্বাবধানে নগরীর বেশ কিছু সড়ক চওড়া করার কাজ শেষ করা হয়েছে। এই সময় কোর্ট রোড, স্টেশন রোড, রিয়াজউদ্দিন বাজার, লালদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লাহ, বক্সিরহাট, খাতুনগঞ্জ, চাকতাই, চকবাজার এলাকায় সড়কের উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত আট বছরে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ককে চার লেনে রূপান্তর করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে চট্টগ্রামে সিডিএর তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলমান।
বর্তমানে সিডিএর তত্ত্বাবধানে ১২টি প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে চলতি বছরই শেষ হবে তিনটি প্রকল্পের কাজ। ২০১৮ সালের মধ্যে ৭টি এবং ২০১৯ সালের মধ্যে দুটি বড় প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সালামকে পঞ্চমবারের মতো নিয়োগ দেয়া হবে-এটা আগেই চূড়ান্ত ছিল। এই পুনঃনিয়োগ ঠেকাতে চট্টগ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ সম্প্রতি উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। এরপর গত ৩ এপ্রিল তার পুনঃনিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-এই কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করে একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এমএম)
মন্তব্য করুন