কাকরাইলে র্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৫
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে র্যাব সদস্য পরিচয়ে বেসরকারি চাকরিজীবীর কাছ থেকে ২৬ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে রমনা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও আটটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– মো. সাজ্জাদ হোসেন (৩৫), মো. কবির হোসেন (৫০), মো. শরিফ (২৫), মো. মনির হোসেন (৪০) ও মো. হাবিবুর খন্দকার (৩৮)।
শুক্রবার রাতে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
তালেবুর রহমান জানান, গত ৪ ডিসেম্বর বিকালে স্কুলব্যাগে ২৬ লাখ টাকা নিয়ে বংশাল চৌরাস্তা থেকে প্রচেষ্টা বাসে বাড্ডার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাসটি রমনার কাকরাইল মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়ালে হঠাৎ ১০-১২ জন লোক ওই বাসে উঠে নিজেদেরকে র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে যাত্রীদের বলে, গাড়িতে মামলার আসামি রয়েছে।
এরপর সাইফুল ইসলামকে তারা জোরপূর্বক টানা হেঁচড়া করে বাস থেকে নামিয়ে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে উঠায় এবং শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার সাথে থাকা ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকা, তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগসহ ১০ হাজার টাকা, হাত ঘড়ি, প্যান্টে পরিহিত বেল্ট ছিনিয়ে নিয়ে দুই হাত ও চোখ বেঁধে ডেমরা এলাকার রাস্তায় ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় গত ১১ ডিসেম্বর মো. সাইফুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা রুজু হয়। এ মামলায় বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার ইসিবি চত্বর এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দসহ এর চালক মো. কবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন দুপুরে বংশালের আল রাজ্জাক হোটেলের সামনে অভিযান পরিচালনা করে সাজ্জাদ, শরিফ, মনির, হাবিবুর নামে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
তালেবুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বাহিনীর সদস্যের মতো চেইন অব কমান্ড মেনে ডাকাতি করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নেতৃত্বস্থানীয় সদস্যদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করে এবং সে অনুযায়ী ডাকাতির পর ভাগের টাকা নির্ধারণ করে। তাদের এই দলের মোট সদস্য সংখ্যা ১০-১২ জন। যারা একেকটি ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন ধাপে কাজ করে থাকে।
গ্রেপ্তারকৃতদের রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, অন্যান্য লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা ও ডাকাত দলের পলাতক অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা তালেবুর।
(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/এলএম/এমআর)
মন্তব্য করুন