ঝিনাইদহে মাছ চাষে সফল উদ্যোক্তা আলিম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ মে ২০২৫, ১১:৫৩
অ- অ+

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃত মুজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল আলিম।

২০১৯ সালে গ্রামের একটি বিলে সাড়ে ৯ একর জমিতে ৩টি পুকুর লিজ নিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ। চাষ করেন পাবদা, তেলাপিয়া, দেশী ট্যাংরা মাছের মিশ্রচাষ। শুরুতে কিছুটা লাভ হলেও করোনার ছোবলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তিনি। সে বছর লাভ তো দূরের কথা চরম আর্থিক সংকটের কারণে মাছের খাবার কেনার পয়সা জোগানোও কঠিন হয়ে পড়ে। তবে হাল ছাড়েননি আলিম।

চরম হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে আশার ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাত থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। এরপর ঝিনাইদহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা, তেলাপিয়ার পোনা এনে পুকুরে ছাড়েন। যথাসময়ে পুকুরে মাছের খাদ্য প্রয়োগ এবং পরিচর্যা করতে থাকেন। মাছ বড় হলে তা বাজারে বিক্রি করলে সব খরচ বাদ দিয়ে বেশ লাভ হয় তার। এরপর বেশি লাভের আশায় ফের ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাত থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে জমি খনন করে নতুন পুকুর তৈরি করেন। এরপর সেই পুকুরে পাঙ্গাস এবং কার্পজাতীয় মাছের পোনা ছাড়েন। মাছ লালন পালন করে বড় হলে স্থানীয় মাছের আড়তে বিক্রয় করতে থাকেন। এতে সেই বছরেই খরচ বাদে লাভ হয় প্রায় ৭ লাখ টাকা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন স্থানীয় পর্যায়ে তিনি সফল মৎস্য উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। ৩টি পুকুরে চাষ শুরু করলেও বর্তমানে তার পুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭টিতে।

আব্দুল আলিম বর্তমানে ৩৫একর আয়তনের পুকুরে মিশ্রভাবে তেলাপিয়া, পাবদা, দেশি ট্যাংরা, রুই কাতলা, মৃগেল মাছ চাষ করছেন। মাছ ব্যবসায়ীরাও জলাশয়ে গিয়ে মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। আলিম প্রতিবছর মাছ চাষ করে আয় করছেন প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা। এছাড়াও পুকুর পাড়ে চাষ করা সবজি এবং কলা বিক্রি করে মাসে বাড়তি আয় করছেন। আব্দুল আলিমের সফলতা দেখে গ্রামের অন্যরাও ঝুঁকে পড়েছেন মাছ চাষে।

আব্দুল আলিম বলেন, আশার ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প খাতের ঋণের অনেক সুবিধা। এই ঋণের সার্ভিস চার্জও কম। তাছাড়া মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। আশার ঋণদানকৃত এনজিও’র টেকনিক্যাল অফিসার কিলন চন্দ্র রায় নিয়মিত আমার মাছের প্রকল্প পরিদর্শন, মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ঋণের পুরো টাকা প্রকল্পে বিনিয়োগ করে উপার্জনের পাশাপাশি কিস্তি চালাতে আমার কোন কষ্ট হয় না।

এ ব্যাপারে আশা এনজিও'র টেকনিক্যাল অফিসার (কৃষি) কিলন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আব্দুল আলিমের এই সফলতার পেছনে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা এনজিও'র নিজস্ব অর্থায়নে ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাতের আওতায় তাকে মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি,সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার এই সাফল্য অন্য মাছ চাষিদের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।

(ঢাকা টাইমস/০১মে/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিপুল সমাগমে নয়াপল্টনে চলছে শ্রমিকদলের সমাবেশ
রূপগঞ্জে গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ: দগ্ধ ৩ 
শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা
শিবচরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা