ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন হজমের সমস্যা

দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া প্রচন্ড তাপপ্রবাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তীব্র এই গরমে নানা অসুখ হানা দেয় শরীরে। তার মধ্যে অন্যতম খাবার হজমের সমস্যা। এই সমস্যা থেকে হতে পারে পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, আবার হতে পারে ডায়রিয়াও। তাছাড়া একটু বেশি খেয়ে ফেললে কিংবা স্বাভাবিকের চাইতে একটু বেশি তেলেভাজা জাতিয় খাবার বা মশলাদার খাওয়ারের অভ্যাস থাকলে কিছু দিন পর পরই হজমের সমস্যায় অনেককেই পড়তে দেখা যায়। এই রকম হজমের সমস্যার সমাধানের জন্য ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন হজমের সমস্যা। কিছু অভ্যাসে বদল এনে আর কয়েকটি নতুন অভ্যাস গড়ে তুলে হজমশক্তি বাড়িয়ে নেওয়া যায় খুব সহজেই। চলুন তেমন কয়েকটি নিয়ম জেনে নিই-
কলা
কলায় প্রচুর পটাশিয়াম পরিমাণে থাকে। এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। তাই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের বিরুদ্ধে এটি প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলেই আপনার গ্যাস-অম্বলের সম্ভাবনা কমবে।
জোয়ান
জোয়ানে আছে থাইমল। যা অ্যাসিডিটি কমাতে পারে। দ্রুত উপকার পাওয়া যাবে। তবে জোয়ান কাঁচা না খেয়ে সামান্য নুন দিয়ে শুকনো কড়াইয়ে নেড়ে নিন।
মৌরী
খাবার খাওয়ার পরে মৌরী খাওয়ার চল রয়েছে ভারতে। তা আসলে অ্যাসিডের সমস্যা ঠেকানোর জন্যই।
ঠান্ডা দুধ
ঠান্ডা দুধ বা ঘরের তাপমাত্রায় থাকা দুধ খেলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা মিটতে পারে।
মধু
এক টেবিল চামচ মধু এক গ্লাস ঈষদোষ্ণ জলে গুলে নিয়ে ধীরে ধীরে খান। চাইলে এতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রসও দিতে পারেন। অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে কাজে লাগবে।
ধনেপাতা
ধনেপাতা বা গোটা ধনের দানা— দুটিই অ্যাসিডের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে। পেট ফাঁপা, গা গুলনো বা অ্যাসিডিটি থেকে বুকে অস্বস্তি হলে ধনেপাতার রস বা গোটা ধনে ভোজানো চা খেয়ে দেখতে পারেন।
তুলসী পাতা
তুলসী পাতা পাকস্থলীতে শ্লেষ্মার মতো পদার্থ উৎপাদন বাড়াতে উদ্দীপনা জোগায়। এতে শীতলীকরণ এবং বায়ুনাশক উপাদান রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির কার্যকারিতা কমাতে সহায়ক। গ্যাসের সমস্যা হলেই ৫-৬টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। অথবা ৩-৪টি তুলসীপাতা সিদ্ধ করে সেই জলে একটু মধু মিশিয়ে খেলে চটজলদি আরাম পাবেন।
দারচিনি
দারচিনিতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। আধ চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো এক কাপ জলে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। এরপর ঠান্ডা করে পান করুন। প্রতিদিন এভাবে তিনবার দারচিনি মিশ্রিত জল পান করলেই আরাম পাবেন।
পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা অ্যাসিড নিঃসরণের গতি কমায় এবং হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এই পাতার একটি শীতলীকরণ প্রভাবও আছে যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সঙ্গে গলা, বুক জ্বালা কমায়। সুতরাং কয়েকটা পুদিনা পাতা একটি পাত্রের জলে নিয়ে ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে ঠান্ডা করে পান করলে উপকার পাবেন।
টক দই
টক দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে অ্যাসিড জমা হওয়া প্রতিরোধ করে। এর সঙ্গে গোলমরিচ যোগ করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে। টক দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়াকেও শক্তিশালী করে।
লবঙ্গ
লবঙ্গ পাকস্থলীর গ্যাস উৎপাদন প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে উপকার।
ডাবের পানি
ডাবের পানি পাকস্থলীতে শ্লেষ্মা উৎপাদনে সহায়ক। যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত গ্যাস জমতে দেয় না। ফলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দূর হয়।
এলাচ
এলাচ হজম ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। এটি অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণের সম্ভাবনা দূর করে। গ্যাস অম্বলের সমস্যায় দুটি এলাচ গুঁড়ো করে জলে ফুটিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
আদা
আদা কুচি করে বিট লবণ দিয়ে খেলে গ্যাস, অম্বল রোধে অত্যন্ত ভালো ফল পাওয়া যায়।
(ঢাকাটাইমস/১ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন