নির্বাচনি প্রতীক: নৌকা বাদ ও শাপলা তালিকাভুক্ত করার দাবি এনসিপি’র

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন এবং নির্বাচনী প্রতীকের তালিকা থেকে 'নৌকা' বাতিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একইসঙ্গে এনসিপি’র প্রতীক হিসেবে শাপলা তালিকাভুক্ত করারও দাবি জানিয়েছে দলটি।
এনসিপি’র নেতাদের ভাষ্য, শাপলা জাতীয় প্রতীক নয়। এ প্রতীক পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।
এসময় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ। বৈঠক শেষে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বেঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে আমাদের শাপলা ছাড়া বিকল্প অপশন নেই। আইনগতভাবে শাপলা পেতে আমাদের কোনো বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয়, সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। এটা স্ট্রেট ফরোয়ার্ড কথা। ইসি যেভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল, আগের সেই আইন পরিবর্তন করতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী ইসিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যারা ভালো কাজের পরিচয় দিয়েছে তাদের রাখা যেতে পারে। অনেকে তাদের ব্যক্তি জায়গা থেকে একটা দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকা সত্ত্বেও তালিকা থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়া হয়নি। আমরা এ বিষয়টি ইসির নজরে এনেছি। আইনগতভাবে নৌকা প্রতীক তালিকায় রাখতে পারে না ইসি। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এরপরই নিবন্ধন স্থগিত করে ইসি। যতক্ষণ আওয়ামী লীগের বিষয়ে সরকারের অন্য কোনো সিদ্ধান্ত বা আদালতের কোনো নির্দেশনা না আসবে, ততক্ষণ নৌকা প্রতীক তালিকায় রাখা যাবে না।
শাপলা জাতীয় প্রতীক নয় উল্লেখ করে জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, জাতীয় প্রতীক হচ্ছে ভাসমান শাপলা, ধানের শীষ, তারকা, পাটপাতা। এই চারটি উপাদানের মধ্যে ধানের শীষ এখন বিএনপির প্রতীক। তারকা একটি দলের ও সোনালী আঁশ আরেকটি দলের প্রতীক। জাতীয় ফল কাঁঠালও একটি দলের রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নৌকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছি, তালিকায় রাখা যাবে না। এটি করতে গেলে ইসিকে ওই তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। সে জায়গায় আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে নতুন দরখাস্ত দিয়েছি।
এর আগে গত ২২ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধনের আবেদন করে। ওইদিন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, আমাদের দলীয় প্রতীকের জন্য তিনটি মার্কার আবেদন করেছি। সেগুলো হলো শাপলা, কলম ও মোবাইল। আমাদের প্রথম পছন্দ শাপলা প্রতীক। আমরা আশা করছি, জনগণের মার্কা হিসেবে এবং গণঅভ্যুত্থানের মার্কা হিসেবে, গ্রাম বাংলার প্রতীক হিসেবে শাপলা এনসিপি পাবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার প্রতীক তালিকায় নতুন-পুরাতন সব মিলিয়ে ১১৫টি প্রতীক অন্তভুক্ত করে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শাপলা প্রতীক তফসিলভুক্ত করা হয়নি। পাশাপাশি নিবন্ধন পুনর্বহালের পর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে এবং নিবন্ধন স্থগিত থাকলেও নৌকা প্রতীক বহাল রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এলকে)

মন্তব্য করুন