প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশুকে খুন, মা গ্রেপ্তার
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চুয়াডাঙ্গায় আলামিন নামে এক শিশুসন্তানকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন এক মা। তবে এর দায় প্রতিপক্ষের ঘাড়ে চাপিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি মা হাসিনা বেগমের। পুলিশের জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেছেন শিশু হত্যার কথা।
বৃহস্পতিবার রাতে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগে পুলিশ রাতেই হাসিনা বেগমসহ তিনকে আটক করেছে।
নিহত আলামিন উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামের হাটপাড়ার আজিবর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হাসিনা বেগম তার তিন সন্তান নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১১টার দিকে হাসিনা বেগম হঠাৎ চিৎকারে করে তার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার করতে থাকেন। এ হত্যাকাণ্ডে গ্রামের দুইজনকে চিনতে পেরেছেন বলেও প্রচার করেন তিনি।
খবর পেয়ে রাতেই দামুড়হুদা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে নিহত শিশুর মা হাসিনা বেগমসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
শুক্রবার সকালে পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেন। এ সময় গ্রামবাসীরা জানায়, হাসিনা বেগমই তার শিশুকে হত্যা করেছেন।
প্রতিবেশী কহিনুর বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাসিনা বেগম অনেকটা মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু আলামিনকে মারধর করতেন। তাকে ঠিকমত খেতেও দিতেন না।
স্থানীয় মুনসুর আলী জানান, কয়েক দিন আগে গ্রামের জহুরুল ও ইব্রাহিমের সাথে হাসিনা বেগমের জমি নি্য়ে বিরোধ দেখা দেয়। এদেরকে জড়াতেই নিজ শিশুকে হত্যা করে এর দায় তাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা ছিল হাসিনার।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন ঢাকাটাইমসকে জানান, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে শুক্রবার দুপুরে হাসিনা বেগম শিশু আলামিন হত্যার কথা স্বীকার করেন। হাসিনা তার স্বীকারোক্তিতে জানান, প্রতিপক্ষ জহুরুল ও ইব্রাহিমকে ফাঁসাতেই বেশ কিছুদিন ধরেই সুযোগ খুঁজছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার স্বামী ঢাকায় আম বিক্রি করতে গেলে এ সুযোগে রাত ১১টার দিকে ধারালো দা দিয়ে ১২ বছরের শিশু আলামিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি প্রচার করেন গ্রামের জহুরুল ও ইব্রাহিম তার ঘরে ঢুকে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খাঁন ঢাকাটাইমসকে জানান, হাসিনার স্বীকারোক্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো দা-টি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন