‘এমন সুযোগ আগামী দশ বছরেও আসবে না’

দেলোয়ার হোসেন, বার্মিহাম, ইংল্যান্ড থেকে
| আপডেট : ১৭ জুন ২০১৭, ১০:৪৮ | প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০১৭, ০৯:২৪

৪১.১ ওভারেই খেলা শেষ। ভারতের পড়ে থাকলো নয় নয়টি উইকেট। ভারত শক্তিশালী, তাই বলে এভাবে হারবে বাংলাদেশ? এমন ম্যাচ দেখার জন্যই কী ২০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে এসেছি? জানেন, এক ম্যাচ দেখতে এক হাজার পাউন্ড খরচ করেছি। এক হাজার পাউন্ড! ৮০ পাউন্ডের টিকিট ৫০০’এ কিনতে হয়েছে। আমি একটা, আমার ছেলে একটা।’

দক্ষিণ লন্ডনের স্থায়ী বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ চৌধুরী এভাবেই হতাশা প্রকাশ করলেন। একসময় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার চেয়ে বড় পরিচয় তিনি ভালো ফুটবল খেলতেন একসময়। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। খেলেন জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৬ দলেও। এখন লন্ডনে সুপ্রতিষ্ঠিত। নিজের কয়েকটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আছে। ব্যস্ততার শেষ নেই, কিন্তু বাংলাদেশের ম্যাচ হলে মাশরাফিদের জার্সি গায়ে চেপে, লাল সবুজের পতাকা হাতে ছুটে যান মাঠে।

ভারত পরাক্রমশালী। কিন্তু এই ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে ওঠে যাবে, অনেকের মতো তিনিও ‘বিরাট’ স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়ায় আহত তিনি।

দলের একাদশ নিয়ে, মোস্তাফিজ তাসকিনদের বোলিং, ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ববোধ নিয়ে তার অনেক প্রশ্ন। ‘মোস্তাফিজ কী বল করলো বুঝলাম না। এটা কী কোনো বোলিং হলো! এটা কী কোনো ভালো বোলারের কাজ! কোনো কিছুই তো নেই ওর বোলিংয়ে। সৌম্যকে কেন বারবার নেওয়া হচ্ছে? এই লেভেলে খেলার তো কোনো কোয়ালিটি ওর মধ্যে দেখছি না। কোনো ফুটওয়ার্ক নেই। টেকনিক্যালি দুর্বল। ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার একটা ভালো সুযোগ ছিল আমাদের। আগামী দশ বছরে আর এমন সুযোগ পাবে? এত সুন্দর সুযোগটা হাতছাড়া করে ফেললো।’

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠার পর থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যেন ঈদের খুশি শুরু হয়ে যায়। সর্বত্র বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে আলোচনা। বাংলাদেশের জয় দেখার জন্য অধীর হয়ে ছিলেন ব্রিটেনের বিভিন্ন সিটিতে বসবাসরত লাখ-লাখ প্রবাসী। কিন্তু বাজেভাবে হেরে যাওয়ায় তারা একদিকে যেমন হতাশ, অন্যদিকে ক্ষুব্ধ। লজ্জাজনক হারটা মেনে নিতে পারছেন না তারা। টিকিট ম্যানেজ না করতে পারলেও অনেকেই ওইদিন কাজে যাননি। বাসায় বসে টিভিতে ম্যাচ দেখেছেন। কিন্তু এমন ম্যাচের জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না। মাশরাফিদের বড় হারে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে যেন শোক নেমে আসে।

কার্ডিফে বসবাস করেন খিজির আহমেদ।বাংলাদেশের খেলা হলে মাঠে গিয়ে দলকে সমর্থন দিতে বাংলাদেশিদের উদ্বুদ্ধ করে বেড়ান তিনি। নিজের সময় নষ্ট করে, অর্থ খরচ করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে টিকিট বিলি করেন। কার্ডিফের পরোপকারী হিসেবে খ্যাত চিরতরুণ এই খিজির আহমেদও হতাশ হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের লজ্জাজনক হারে।

বলেছেন, ‘অনেক আশা করেছিলাম, বাংলাদেশ ভালো খেলবে। কিন্তু সেমিফাইনালে এটা কী করলো তারা? এই ম্যাচটা জেতা দরকার ছিল। বাংলাদেশের সম্মান আরও বেড়ে যেত। ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা বিরাট বড় ব্যাপার হতো। সুযোগটা মহাতছাড়া হয়ে গেল।’

(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :