দুদককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে: ফখরুল
সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুদকের আসল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের ধরা। কিন্তু বাথরুমে কার কমোডে কয়টা ঢাকনা সেটা দেখার কাজ তো দুদকের নয়।’
দুদকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘মুক্তচিন্তার মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া আওয়ামী লীগ সরকারের চরিত্র। যার প্রমাণ আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা।’
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব বলেন। ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। আমার দেশ পরিবার এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বহু সংবাদমাধ্যম ও পত্রিকা বন্ধ করেছে। এমনকি সাংবাদিককে হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে। এই সরকার অতীতেও একই কাজ করেছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে, সম্পাদককে জেলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এবার তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধেও মামলা দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আজকে সবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের সাড়ে সাত হাজার মামলা প্রত্যাহার করেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও মামলা ছিল। কিন্তু সেটাও প্রত্যাহার করেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আসলে দেশের প্রধান সমস্যা হলো গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। গণমাধ্যমের লেখার স্বাধীনতা নেই। জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগামী দিনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক একটি নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।’
আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না এমন দাবি করে আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) অতীতেও গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ করেছিল। ১৬ জুন ছিল সংবাদপত্রের কালো দিবস।’ তিনি বলেন, ‘আসলে সরকার জিয়া পরিবার এবং আমার পরিবারকে ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু আমি যতদিন বাঁচবো ততদিন দেশের স্বাধীনতার পক্ষে এবং ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় লড়াই চালিয়ে যাবো। হামলা মামলা করে আমার কণ্ঠরোধ করা যাবে না।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আজকে দেশে দুর্নীতির সয়লাব চলছে। পদ্মা সেতুর জন্য আবারো খরচ বাড়ানো হয়েছে। জনগণের পকেট কেটে নেয়া হচ্ছে। এতটাকা কোথায় যায় সবাই জানে।’ দেশ থেকে বছরে নয় হাজার মিলিয়ন টাকা পাচার হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/বিইউ/জেবি)
মন্তব্য করুন