অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি বাবলুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জুন ২০১৭, ১৫:৩৮ | প্রকাশিত : ২০ জুন ২০১৭, ১৪:৪৬

অর্থমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও দলটির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। একইসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘ফৌজদারি অভিযোগ’ করারও দাবি জানান তিনি।

মঙ্গলবার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি করেন। ব্যাংকিং খাতে ‘লুটপাট’ হওয়ার পরও মূলধন সংকটের কারণে প্রস্তাবিত বাজেটে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখায় এই দাবি জানান তিনি।

বাবলু বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর অনেক বয়স হয়েছে। তিনি শ্রদ্ধাভাজন। আর কত? এখন তার পদত্যাগ করা উচিত।’ অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি বিদায় নিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে মুক্তি দিন।

প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেন জাপার এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন? এ ধরনের প্রস্তাব কোনোভাবেই উনি করতে পারেন না। এই টাকা উনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে দিতে পারতেন। কেন আপনি দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনে দেবেন। আগের তিন অর্থবছরেও আপনি টাকা দিয়েছেন।

আলোচনায় মুহিতের বিরুদ্ধে ‘ফৌজদারি অভিযোগ’ করারও দাবি তোলেন তিনি। জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, ‘ট্যাক্স পেয়ারের মানি দিয়ে লুটের টাকার ঘাটতি পূরণের কোনো অধিকার নেই। এজন্য তো উনাকে (অর্থমন্ত্রী) আইনের আওতায় আনতে হবে। এজন্য তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত।’

ব্যাংক খাতে লুটপাটের অভিযোগ এনে বাবলু বলেন, ব্যাংকগুলোকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই।’

আলোচনায় খেলাপি ঋণ আদায় হলে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে মন্তব্য করেন জাপার এই সাংসদ। তিনি বলেস, ‘লুটপাট কারা করছে? এরা কি আপনাদের চেয়ে, সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কেন তাদের আইনের আওতায় আনবেন না?’

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বাবলু বলেন, ‘আপনি কি উন্নয়নের মহাসড়কে নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন, সেটা বিবেচনার বিষয়।’ অর্থমন্ত্রী নাইটিঙ্গেলে কল্পনার সু্ন্দর জগতে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাস্তব জগত অনেক কঠিন। অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা শুনে মনে হয়েছে বিধ্বস্ত মন্ত্রীর বর্ণাঢ্য রূপকল্প।

বাবলু বলেন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পরিবর্তনের কথা বললেও অর্থমন্ত্রী বলেছেন এই বাজেট পরিবর্তন করার এখতিয়ার শুধু আমার। আর কারো না। সরকারের মধ্যে যদি এই মতভেদ থাকে তাহলে তো কোনো কিছু বাস্তবায়ন হবে না। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের মাপকাঠি না। তিনি (অর্থমন্ত্রী) মিথ্যার বেসাতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। সত্যের কাছাকাছি থাকতে হবে। সত্যকে আলিঙ্গন করার সাহস থাকতে হবে।’

বাজেট আলোচনায় ব্যাংক হিসাবে বাড়ানো আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান জাপার সাবেক মহাসচিব। বলেন, ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক ভুল বার্তা দিচ্ছে।

বাবলু বলেন, খেলাপি ঋণ যদি আমরা উদ্ধার করতে পারতাম তাহলে ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর দরকার ছিল না। আবগারি শুল্ক বাড়ানোর দরকার ছিল না। আজকে মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

সম্প্রতি এক আলোচনায় আবগারি শুল্কের নাম পাল্টে দেয়ার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এর নাম আবগারি শুল্ক কোনোমতেই হওয়া উচিত না। নামটা পাল্টানো দরকার। আবগারি শুল্ক বহু বছর ধরেই আছে। সবাই দিয়েও যাচ্ছেন। এবারের বাজেটে হারটা একটু বেড়েছে। তবে সুযোগও বেড়েছে।’

অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বাবলু বলেন, কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন রাখলে কানা ছেলে কানাই থাকে।

ঢাকাটাইমস/২০জুন/টিএ/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :