পাট ক্ষেত থেকে পাকা টয়লেট, এটাই উন্নয়নের প্রমাণ: মুজিবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১০:৪৫

বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে এবং এটাই দেশের উন্নতির প্রমাণ- এমন মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি বলেছেন ‘বছর ত্রিশেক আগেও এদেশের মানুষ এক সময় পাট ক্ষেতে, খোলা জায়গায় পায়খানা করতো, আমিও করেছি, কারণ আর কোনো উপায় ছিলো না। এখন ঘরে ঘরে পাকা টয়লেট। এটাই আমাদের উন্নয়নের প্রমাণ।’

বুধবার জার্মান মালিকানাধীন রাসায়নিক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিএএসএফ বাংলাদেশ এর আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। বিএএসএফ বাংলাদেশের উদ্যোগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য হাত ধোয়া কর্মসূচির উদ্বোধন এবং শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ৫০ লক্ষ টাকার অনুদান গ্রহণের জন্য অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী।

মুজিবুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা ভাবনা বদলেছে। মানুষ এখন স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবে। ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভাবে। এটা ভালো লক্ষণ। এর মানে হচ্ছে মানুষ সচেতন হচ্ছে। তাদের আর কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

গার্মেন্টেসের কর্মীদের জন্য হাত ধোয়া কর্মসূচি উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ।আমি বিএসএফকে ধন্যবাদ দেবো, কারণ তারা এই জিনিসটি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। শ্রমিকের স্বাস্থ্য সচেতনতা, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তারা যে চিন্তা ভাবনা করছেন এটা খুব ভালো কাজ হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান তিনি নিজেও কোথাও গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শনে গেলে আগে মহিলা টয়লেটে ঢুকে দেখেন সেটা পরিষ্কার কিনা। শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ যাতে ভালো থাকে সেজন্যও তিনি মালিকদের নানান পরামর্শও দেন।

এ প্রসঙ্গে মুজিবুল হক নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথাও জানান উপস্থিত অতিথিদের। বলেন, ‘একবার এক বিদেশি গার্মেন্টস কারখানায় ঢুকে দেখি ফ্যান কম। গরমের মধ্যে বসে শ্রমিকরা কাজ করছে। আমি একটা টুল নিয়ে ভেতরে বসে পড়লাম। বসে বসে তাদের কাজ দেখছি। এদিকে গার্মেন্টসের বিদেশি মালিকও আমার সাথে দাঁড়ান। আমি যেহেতু নড়ছি না, তিনিও সরে যেতে পারছেন না। এভাবে ২০ মিনিট বসে থাকলাম। আমার শরীর দিয়ে দরদর করে ঘাম পড়ছে, বিদেশি মালিকের শরীর থেকেও ঘাম বের হচ্ছে। আমি তাকে বললাম আপনি আর আমি ২০ মিনিট যেখানে থাকতে পারি না সেখানে এরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করে। কয়েকটা ফ্যান বেশি লাগালে কি হয়?’।

‘তারপর আমি চলে আসি। এর এক সপ্তাহ পরে সেই বিদেশি আমাকে ফোন দিয়ে জানিয়েছে সে তার কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমানে ফ্যান লাগিয়েছে, আমি যেন দেখে যাই। অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে অনেক ব্যবসায়ী এ রকম করে। আমি তাদেরকে আরো শ্র্র্রমিকবান্ধব হতে বলি।’

বিএএসএফ বাংলাদেশের কর্মসূচি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করছেন, এবং ভবিষ্যতে আরো ভালো কাজ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আমার একটা ছোট্ট অনুরোধ, আপনাদের এই ভালো কাজের অংশ হিসেবে শিশু শ্রমিকদের জন্য কিছু করেন। তারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। আপনারা অন্তত কিছু বাচ্চার পড়ালেখার দায়িত্ব নেন।’

একটি সফল অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিএএসএফ কর্তৃপক্ষ প্রতিমন্ত্রীর হাতে ৫০ লক্ষ টাকার একটি অনুদানের চেক তুলে দেন। তারা বস্ত্র শ্রমিকদের এক অংশের সাথে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিয়েও কথা বলেন। বিএএসএফ বাংলাদেশের এই আয়োজনে জার্মান রাষ্ট্রদূত থমাজ প্রিন্স, বস্ত্র ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান এবং বিএএসএফ সাউথ এশিয়ার প্রধান রমন রামানন উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/কেএস/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :