আপাতত ঢাকায় বন্যার আশঙ্কা কম
আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হলেও ঢাকায় এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাইফুল হোসেন। তিনি বলেছেন, তবে পানি বাড়ার বর্তমান প্রবণতা ৭২ ঘণ্টার বেশি প্রলম্বিত হলে ঢাকায় পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হবে।
সোমবার দুপুরে মতিঝিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বলেন, এই মুহূর্তে তাদের মূল ভাবনার বিষয় ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। কেননা সেখানে এমন বন্যা গত ৫০ বছরে দেখা যায়নি।
উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবে অবশ্য ঢাকার চারদিকের পাঁচ নদী- বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরীর পানি বাড়ছে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বলেন, ‘তবে সোমবার সকালে বিপদসীমার ৬০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় এসব নদ-নদীর পানি। বর্তমান অবস্থান থেকে আরো ৬০-৭০ সেন্টিমিটার পানি বাড়লেও তা বিপদসীমার নিচে অবস্থান করবে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় গঙ্গা-যমুনার পানি বাড়বে জানিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, এ সময়ে আরও পানি যোগ হলে ঢাকার ওই পাঁচ নদীর পানি ৬০-৭০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করতে পারে। তবে তা বিপদের কোনো আশঙ্কা তৈরি করবে না।
সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, ‘গঙ্গা-যমুনার পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর কমতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পানির সাপ্লাই বন্ধ হয়ে গেলে হয়তো আল্লাহর রহমতে মধ্যাঞ্চল (ঢাকাসহ) রক্ষা পাবে। তবে টোটালি নয়, কিছু অঞ্চলে হালকা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও হতে পারে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় পানি ঢুকলে তা নামতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। আর পানির প্রবাহ চলতে থাকলে সেটা এক মাসও লাগতে পারে।
এই মুহূর্তে উত্তরাঞ্চলের বন্যা তাদের মূল বিষয় জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাইফুল হোসেন বলেন, গত ৫০ বছরের ইতিহাসে সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরে কখনো এমন বন্যা হয়নি। এখানকার মানুষের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা নেই। তাই বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতও নয় তারা।
রংপুর, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতিও আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অবনতি হবে বলে জানান তিনি। ৭২ ঘণ্টা পর পানি কমবে অথবা স্থিতিশীল থাকবে।
এদিকে বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে বাড়ছে পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ এর শাখানদ-নদীর পানি। আগামী তিন দিন এসব নদীর পানি আরও বাড়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/জেআর/জেবি/মোআ)