জলমগ্ন রাজধানীতে জন ও যানশূন্য
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাজধানীর অনেক এলাকা। রাস্তাঘাট জনশূন্য। যানবাহন তেমন একটা নেই। খুব জরুরি প্রয়োজনে যারা বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন তারা হাঁটুপানি কোমরপানি ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
মতিঝিল, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, পল্টন, গুলিস্তান, মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়ারির জাকিয়া সুলতানা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি মোবাইল ফোনে ঢাকাটাইমসকে জানান, বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি রাস্তায় বেরিয়েছেন ইস্কাটনে তার অফিসে যাবেন বলে। কিন্তু এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও থেকেও কোনো বাস পাননি। এমনকি একটা রিকশাও নেই। তিনি জানতে পেরেছেন, গুলিস্তান, মতিঝিলের রাস্তায় পানির কারণে এদিকে কোনো যানবাহন আসছে না।
খিলক্ষেত থেকে আমির হোসেন জানান, পুরো খিলক্ষেতের রাস্তা, অলিগলি সব তলিয়েছে বৃষ্টি আর স্যুয়ারেজের পানিতে। প্রায় সব বাড়িঘরের নিচতলায় পানি ঢুকেছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান ঢাকাটাইমসকে জানান, বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি ঝরছে।
এই বৃষ্টি আজও প্রায় দিনভর ঝরবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে রবিবার বৃষ্টি কমে আসবে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
পুরান ঢাকা থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক বোরহান উদ্দিন জানান, পানিতে এই এলাকায় সাধারণত পানি জমে না। তারপরও কিছু এলাকায় হালকা পানি জমেছে। এছাড়া আজ সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সড়কে লোকজনের উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে। রাস্তায় গাড়ি চলাচলও অনেকটা কম দেখা গেছে।
রামপুরা থেকে আমাদের প্রতিবেদক আউয়াল খান জানান, রামপুরার যেসব এলাকায় ড্রেনের কাজ চলছে সেগুলো অধিকাংশই পানিতে ভরে গেছে। আর কিছু সময় বৃষ্টি হলে সেগুলো উপচে পড়বে। অন্যদিকে রামপুরা, মগবাজার ও বনশ্রী এলাকার অধিকাংশ গলি পানিতে ছলছল করছে। অনেক স্থানে হাটু পরিমাণ পানি জমে গেছে।
তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত খানাখন্দে ভরা সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।
রামপুরা-মালিবাগ ও মৌচাক সড়কের অবস্থাও একই। ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় সড়কের খানাখন্দও মেরামত করা হয়নি। এর মধ্যে দুই দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে এখানেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত সড়কের বামপাশে সংস্কার কাজ চলছে। কিন্তু দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এ সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অত্যন্ত ধীরগতিতে যানবাহন চলছে।
একই অবস্থা মিরপুর কালশী সড়কেরও। পুরো রাস্তায় পানির কারণে মধ্যরাতে থেকে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।
বসুমতি পরিবহনের চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ইসিবি চত্বর থেকে কালশী পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। এসব জায়গায় পানিও জমে রয়েছে। ফলে ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকাটাইমস/২১অক্টোবর/মোআ/এমআর