ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মইনুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট
নারী সাংবাদিককে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের ওই মামলায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশান থানার পুলিশ ইনপেক্টর আমিনুল ইসলাম ওই চার্জশিট দাখিল করেন।
রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর ওই চার্জশিটটি শনাক্ত করে বিচারিক আদালত সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৪ অক্টোকর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপ-কমিটির যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সদস্য সুমনা আক্তার লিলি সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলা নিয়ে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন। ওইদিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। এরপর মাত্র ১৬ দিনের তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল হলো।
থানা মামলাটি এহাজার হিসেবে গ্রহণ করার পর কারাগারে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টাকে গত ১ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে গ্রেপ্তার দেখায় সিএমএম আদালত।
মামলায় বাদীর অভিযোগ, আসামি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গত ১৬ অক্টোবর ৭১ টেলিভিশনের লাইভ টেলিকনফারেন্সে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলেন। সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। এরপর তিনি গত ১৮ অক্টোবর ইলেকট্রানিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলেছেন, শুধু তিনি চরিত্রহীন বলছেন না, আরো অনেক মানুষ তাকে চরিত্রহীন বলছেন।
সর্বশেষ তিনি ‘দি নিউনেশন’ পত্রিকার সাবেক সাংবাদিক রব মজুমদারের সঙ্গে টেলিফোনে ওই সাংবাদিক সম্পর্কে একাধিকবার বাজে মেয়ে বলে সম্বোধন করেছেন। তার ওই সমস্ত বক্তব্য দেশের সমস্ত ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় এবং পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত হয়েছে। তার ওই মানহানিকর চরিত্রহীন বক্তব্যে শুধু সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির মানহানি ঘটে নাই। একজন নারী হিসেবে বাদিনীরও মানহানি ঘটেছে। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (২) ও ২৯(২) ধারার অপরাধ।
আইনের ২৫ (১) ধারা অনুযায়ী মিথ্যা তথ্য উপাত্ত ওয়েব সাইট ও অন্য কোন ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ করলে ২৫ (২) ধারা অনুযায়ী ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
অন্যদিকে ২৯ (১) ধারা অনুযায়ী দ-বিধির ৪৯৯ ধারার মানহানিকর তথ্য যদি কেউ দ্বিতীয়বার প্রকাশ করলে ২৯ (২) ধারা অনুযায়ী ৫ বছর পর্যন্ত কারাদ- বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। দুইটি ধারার মধ্যে ২৯(২) ধারার একই আইনের ৫৩ (ঘ) অনুযায়ী জামিন অযোগ্য।
সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলা নিয়ে মানহানির অভিযোগে এর আগে ২২টির মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রথম মামলা। অপর মামলাগুলোর মধ্যে মাসুদা ভাট্টি নিজে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেছেন। রংপুরে হওয়া একটি মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গত ২২ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/আরজে/ইএ