আ.লীগের মনোনয়ন না পেয়ে পদ ছাড়লেন উপজেলা চেয়ারম্যান
উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন রংপুর-১ গংগাচড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু। সোমবার তিনি মেইল ও ডাক যোগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার পদত্যাগপত্র পাঠান।
এর আগে ২০১৪ সালে তিনি দল থেকে বহিষ্কার হয়ে দলীয় প্রার্থীর সাথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর দলীয় প্রার্থীর অবস্থান ছিল ৬ নম্বরে। এবারও তিনি তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সাথে নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, ২০১১ সালে (ছাত্রাবস্থায় ) গংগাচড়া ডিগ্রী কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালে গংগাচড়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। ২০১২ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ছাত্রাবস্থায় এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি ও উন্নয়নমূলক কাজ করেন তিনি। জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় তৃণমূল আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। কিন্তু তখন বাঁধ সাধে দল। কারণ তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর দল মনোনয়ন দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমীনকে। পরে তিনি দলীয় প্রার্থীর সাথে চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর অবস্থান হয় ৬ নম্বরে। আর তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। পরে অবশ্য সাধারণ সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে তাকে।
আসাদুজ্জামান বাবলু জানান, দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝিয়ে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী দেয়া হয়নি। স্থানীয় মানুষ ও আওয়ামী লীগ এখানে দলীয় প্রার্থী চায়, কিন্তু দেয়া হয়নি। তাই তৃণমূল আওয়ামী লীগ চায় আমি নির্বাচন করি। তাদের সম্মানে আমি নির্বাচন করব।
তিনি বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হবার পর গংগাচড়া উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়েছি। সাধ্যমত সেবা করার চেষ্টা করছি। তারা আমাকে স্থানীয় হিসেবে সাংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চায়। তাই উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যহতি দিয়ে সাংসদ পদে নির্বাচন করব।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শেও একনিষ্ট কর্মী। আমি তো এলাকার মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করি। মানুষের জন্যই রাজনীতি। তাদের সেবা করতে চাই।
জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রংপুর-১ গংগাচড়া আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন বর্তমান জাপার রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। জাতীয় পার্টি থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সারাদেশে যে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তাতে এই আসনে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাতেই ধরে নেয়া হয়েছে আসনটি জাপাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এই আসন থেকে বরাবরই জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, বাবুল দলের একজন কর্মী। সে যদি নির্বাচন করে তাহলে তো করার কিছুই নাই। এর আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সদস্যপদ ফিরে দেয়া হয়েছে। যদি সে নির্বাচন করতে চায়, সেটি তার বিষয়। তার নির্বাচনের বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় কমান্ড দেখবে।
(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/আরআই/এলএ)