মেয়েদের এখানে আসা উচিত: ফারজানা সান

বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন জগতের একজন পরিচিত মুখ ফারজানা সান। ২০০৫ সালে প্রথমে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরে ২০০৮ সাল থেকে কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করেন। বর্তমানে ‘বিউটি সার্কাস’ চলচ্চিত্রের কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি শেষ করলেন সেন্টার ফ্রুট, চেয়ার আপ ড্রিংকস ও দুরন্ত সাইকেলের বিজ্ঞাপন।
এই উদ্যোমী নারীর সঙ্গে কথা হয় ঢাকাটাইমসের।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কী ধরনের সমস্যায় আপনাকে পড়তে হতো?
যখন প্রথম কাজ শুরু করি। তখন ছেলেদের মতো করে রাতে মুভ করতে পারতাম না। কারণ অভিনয় শিল্পীরা একজন মা বা পরিবারের কাউকে নিয়ে যেমন শুটিং সেটে যেতে পারছে, একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বা কস্টিউম ডিজাইনার বা আর্ট ডিরেক্টর সেভাবে পারছে না। অথবা নিয়ে এলেও সে তাকে টেককেয়ার করতে পারছে না। সেখানে নিয়ে গেলেও আবার ক্যারিয়ারের জন্যই একটা সমস্যা তৈরি হয়। সবাই জানবে যে ও এলেই তার সঙ্গে আর একজন থাকে সব সময়। এতে এক ধরনের ঝামেলাও তৈরি হয়। এমন সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো।
এই সেক্টরে তো রাতেও টিম ওয়ার্ক করতে হয়?
হ্যাঁ, এখানে ছেলে-মেয়ে সবাইকেই হার্ড ওয়ার্ক করতে হয়। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে একটি ছেলে যেমন সারা রাত জেগে টিমের সঙ্গে কাজ করতে পারে, একজন মেয়ে হওয়াতে আনসিকিউরড ফিল হয়। কাজ করতে করতে একটি ছেলে যেমন যে কোথাও ঘুমিয়ে যেতে পারছে, একটি মেয়ে কিন্তু তেমন পারছে না। এসব কিছু সমস্যা তো রয়েছেই। এ ছাড়া কিছু ছোটখাটো সমস্যা প্রথম দিকে ফেস করতে হয়েছে। বয়দের এক গ্লাস পানি দিতে বললে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যেত না। আসলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে চেনাতেই অনেক বছর লেগেছে।
কী ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে আপনাকে আসতে হয়েছে?
আমি একটুখানি টম বয় টাইপের চলাফেরা করি। তাই আমাকে তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না। তারপরও প্রথম দিকে একবার একটি চ্যানেলে আমি চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। সেখান থেকে পরে আমাকে বিভিন্ন এসএমএস করা হতো। বিভিন্ন জায়গায় যেতে বলত। কয়েকটি এসএমএস এমন পাওয়ার পর আমি কড়া করে একটি টেক্সট লিখে দেই। আর পাঠায়নি। সে কিন্তু একজন প্রমিনেন্ট মানুষ। এখন তার সঙ্গে দেখা হলে সে চেহারা অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখে।
কাজের ক্ষেত্র হিসেবে এই সেক্টরটি মেয়েদের জন্য এখন কেমন?
আমাদের বিজ্ঞাপন সেক্টরে এখন মেয়েদের অনেক চাহিদা। কারণ তাদের কনসেন্ট্রেশন বেশি। তারা বিড়ি-সিগারেট খেতে বারবার বাইরে যায় না, কাজের প্রতি অ্যাটেনশনও বেশি। এখানে চাইলে মেয়েরা ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে পারবে। আগে আমাদের টাকা নিয়ে ঠকালেও এখন তেমন না। দেখা গেল তিন হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা আর দিল না। এখন সব আগে থেকে বলে নেয়া হয়। মেয়েদের যেহেতু কস্টিউম, অ্যাসিস্ট্যান্ট, আর্ট সব ক্ষেত্রেই চাহিদা বেশি, তাই আমি বলব মেয়েদের এখানে আসা উচিত।
ক্রিয়েটিভ এই ক্ষেত্রটিতে ক্যারিয়ার তৈরি করতে হলে কী ধরনের যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন?
তবে এডুকেশনটা ঠিকঠাক করে আসতে হবে। কারণ আগের চেয়ে বিজ্ঞাপনের মান অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন রেফারেন্স দেখতে হয়। বিশ্বের কোথায় কী ধরনের কাজ হচ্ছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখতে হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সর্বক্ষণ কানেক্ট থাকতে হয়। এ ক্ষেত্রে যারা কাজ করতে আগ্রহী তাদের ইন্টারনেটেও ভালো জ্ঞান থাকতে হয়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে ও ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকেও অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন