নটরডেমের ৯৯তম ব্যাচের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন

‘আয় আর একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়/ মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানটি যেন কুড়ি বছর আগে প্রাণের কলেজ নটরডেম ছেড়ে যাওয়া একদল তরুণের মনের কথা। যাদের একজনকে ছাড়া অপরজনের চলতো না এক মুহূর্তও, বিপদে-আপদে আনন্দে-উল্লাসে যারা সবসময় ছিল ছায়ার মতো। মাঝে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল তারা! সেই সব প্রাণের সখীকে চোখের সামনে দেখে তাই সবাই আজ আনন্দে আত্মহারা।
বুধবার নটরডেম কলেজের ৯৯তম ব্যাচের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কে কলেজে পড়ার সময়ের স্মৃতিগুলো দিনভর নানা আয়োজনে, আড্ডায় খুঁজে ফিরেছেন দেশসেরা মেধাবীরা।
যারা এক সময় এক বেঞ্চে বা পশাপাশি ডেস্কে বসতেন অথবা অন্য সেকশনে ক্লাস করতেন। কলেজ জীবনের সেই বন্ধুরা সবাই চল্লিশের কোঠায়। তারা এবার সেই সহপাঠীদের সঙ্গে মিলিত হন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে।
১৯৩ জন নটরডেমিয়ান ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ৬০০ মানুষের মিলমেলায় মুখরিত হয়ে ওঠে পার্কের লেক ভিউ মঞ্চ ও প্রাঙ্গণ। শিশুদের জন্য যেমন ছিল বিস্কুট দৌড়, ক্রিকেট বল নিক্ষেপসহ মজার মজার খেলা, তেমনি তাদের মায়েদের জন্য ছিল মিউজিক্যাল চেয়ার গেমসহ নানা আয়োজন।
২০ বছর উদযাপনের স্মৃতিকে চির স্মরণীয় করে রাখতে প্রকাশ হয়েছে 'প্রাঙ্গণে মোর শিরীষ শাখায় -২০১৯’ নামে ১৭২ পৃষ্ঠার স্মরণিকা। যেখানে প্রবন্ধ, কবিতা, স্মৃতিচারণের পাশাপাশি সব বন্ধুর কলেজে পড়ার সময়ের ছবি ও বর্তমান অবস্থান সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়।
এর আগে সকালে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। নটরডেমিয়ান ৯৯ ব্যাচের এইচ এসসি পরীক্ষার ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মধ্যাহ্ন ভোজের পর বিশাল কেক কেটে হয় 'টোয়েন্টি ইয়ারস সেলিব্রেশন'। চলে নাচ, গান, আবৃত্তি।
সকালে সদস্যদের পরিবারের পাশাপাশি আমন্ত্রিত শিল্পীরাও গান গেয়ে মুগ্ধ করে সবাইকে। পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে সদস্য পরিবারের চার শিশু নৃত্যশিল্পী যখন মঞ্চে ওঠে তখন এক অন্যরকম আবহ সৃষ্টি হয়।
বড়দিন উপলক্ষে সারাদিন সান্তা ক্লজ ছিল নটরডেমিয়ানদের সঙ্গে। শিশুদের আনন্দ বাড়িয়েছে সান্তা ক্লজ। শিশুরা পেয়েছে চকলেট, খেলনা, টিফিন বক্সসহ নানা উপহার। রাতে রাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মিলনমেলা। তবে সদস্যদের মধ্যে এর রেশ থেকে যাবে সারাজীবন।
আয়োজকরা জানান, ৯৯ ব্যাচের ১৮৪০ জন নটরডেমিয়ানকে একত্রিত করতে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ১৮৪০ কলেজ বন্ধুর মধ্যে এক বছরে প্রায় ৬০০ বন্ধুকে এক প্ল্যাটফর্মে আানা হয়েছে। এই গ্রুপে অন্তত ২০০ ডাক্তার, ২০০ ইঞ্জিনিয়ার, ১৫০ ব্যাংকার, ১৫০ সরকারি কর্মকর্তা সহ অন্য পেশার দক্ষ বন্ধুরা আছে। এই মাল্টি ডিসিপ্লিন এর দেশসেরা মেধাবীদের শক্তিকে একত্রিত করে দেশের, সমাজের এবং নিজ বন্ধুদের পরিবারের মান উন্নয়ন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে নটরডেমিয়ান ৯৯ ব্যাচ।
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এনআই/ইএস)

মন্তব্য করুন