খাওয়া পর কোমল পানীয় পানে কি খাবার হজম হয়?

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:২০
অ- অ+

বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে বিক্রিত জনপ্রিয় সুগন্ধযুক্ত সফট বা কোমলপানীয় বেশ পরিচিত। প্রচন্ড গরমে একটু তৃষ্ণা মেটাতে এক চুমুক ঠাণ্ডা কোমলপানীয় বা এনার্জি ড্রিংকসের চাহিদা বেড়েই চলেছে। পার্টি, পিকনিক সব জায়গায় কোমলপানীয় সঙ্গে থাকে। এসব ড্রিংকস স্বাস্থ্যের জন্য শুধু ক্ষতিকর নয় বরং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

কোমলপানীয়র ইতিহাস অর্ধশতকালের। পানি, চিনি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, লেবুর জুস দিয়ে প্রথম তৈরি করা হয় এনার্জি ড্রিংকস। কালের বিবর্তনে এতে এসেছে উপাদানগত পরিবর্তন। যোগ হয়েছে ক্যাফেইন, কখনো বা ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল, অপিয়েট। ক্যাফেইন যোগ করার কারণ হলো, এটি মস্তিষ্ক উত্তেজিত করে। ফলে নিজের মধ্যে ভালো লাগা শুরু হয়।

অনেকেই খাবার হজম করতে কোমলপানীয় খান। এই পানি দ্রবীভূত কার্বন ডাইঅক্সাইড খাবার হজম করিয়ে দেয়। কিন্তু এই কোমলপানীয় খাওয়া কি আদৌ ভাল?

সম্প্রতি ‘ফুড অ্যান্ড রিসার্চ ইন্টারন্যাশনাল’ নামক জার্নালে শরীরের উপর কোমলপানীয়র প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাতে মূল যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে, তা পরপর উল্লেখ করা হল।

কার্বন ডাইঅক্সাইডকে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে পানির মধ্যে দ্রবীভূত করে এই কোমলপানীয় তৈরি করা হয়। সেই কারণেই এ থেকে বুদবুদ উঠতে থাকে। এই পানি খাবার হজম করতে সাহায্য করে।

প্রকৃতি থেকেও কোমলপানীয় পাওয়া যায়। যন্ত্রে তৈরি করা কোমলপানীয় থেকে সেই পানি বেশি ভাল।

অনেক ক্ষেত্রে যন্ত্রে তৈরি কোমলপানীয় চিনি মেশানো হয়। সেই চিনি শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়। প্রাকৃতিক কোমলপানীয় সে দিক থেকে নিরাপদ।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চিনি নেই এমন কোমলপানীয় ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ এই পানি খেলে খিদে কিছুটা হলেও কমে যায়।

কোমলপানীয় বা ‘কার্বোনেটেড ওয়াটার’ শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে। এমনি পানি খেলে যে পরিমাণ ঘাম হয়, কোমলপানীয় তার পরিমাণ অনেকটাই কম।

গবেষণাপত্রে কোমলপানীয় সম্পর্কে বেশির ভাগই ভাল কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই পানি চিনি মেশানো থাকলে, তা এড়িয়ে চলার পরামর্শই দিয়েছেন গবেষকরা। চিনি মেশানো কোমলপানীয় লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে।

উল্লেখ্য, কোমল পানীয়তে ফসফরিক এসিড, ক্যাফেইন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কৃত্রিম চিনিসহ নানা ধরনের রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণ থাকে। খাদ্য হজমে কৃত্রিম পানীয়ের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়, কিন্তু কৃত্রিম পানীয় সাময়িক স্বস্তি দিলেও এটি প্রকৃতপক্ষে পাকস্থলীর ভারসাম্য নষ্ট করে। তাছাড়া এই ধরনের পানীয় শরীরের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দেয় যা পরবর্তীতে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা সৃষ্টি করার পাশাপাশি ক্ষুধামন্দা, অম্লতা বা অ্যাসিডিটি, দাঁতের ক্ষয় বা মেদবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

কোমলপানীয় যাতে সহজে জমে যেতে না পারে কিংবা বরফে রূপান্তরিত না হতে পারে সেজন্য কৃত্রিম পানীয়তে ইথিলিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নি উপাদানটি শরীরে নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলে যার অন্যতম হচ্ছে কিডনিতে পাথর হওয়া।

এছাড়া নিয়মিত কোমলপানীয় পান করলে টাইপ-টু ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। আমেরিকান ডায়েট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা অনুযায়ি, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব, তবে পুরোপুরি নাকচ করা সম্ভব হয় না।

কোমলপানীয় ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’ বা বিপাকীয় প্রক্রিয়ার বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়, যা ক্রমেই ঠেলে দেয় হৃদরোগের দিকে। আছে উচ্চ রক্তপচাপের আশঙ্কাও।

(ঢাকাটাইমস/৯ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলার যুবারা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একদিনে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৫ জনের
বাউফলে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার ঘটনায় তিন উপদেষ্টার তদন্ত কমিটি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা