তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন শুরু আজ
তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। এ সম্মেলনে দেশের আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনাররাও অংশ নেবেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই শেষ ডিসি সম্মেলন। এ কারণে এবারের ডিসি সম্মেলন অন্যান্য বছরের বছরের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ বলে জানা গেছে। ডিসি সম্মেলন চলবে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনে ২৬টি কার্য অধিবেশনে ২৪৫টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শাপলা হলে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর করবী হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন জেলা প্রশাসকরা। সম্মেলন থেকে ডিসিদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে ডিসিরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠানের পরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক কার্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলন কেন্দ্র করে রীতি অনুযায়ী সব জেলার ডিসিদের কাছ থেকে প্রস্তাব নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এগুলো বই আকারে প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া গত ডিসি সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো থেকে সংগ্রহ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এদিকে ডিসি সম্মেলন কেন্দ্র করে গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ডিসি সম্মেলনে সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রী ও সচিবরা সরাসরি উপস্থিত থেকে ডিসিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে হয়তো এটাই শেষ ডিসি সম্মেলন। নির্বাচনের আগে ডিসি সম্মেলন আর নাও হতে পারে। তবে, বছরে একাধিকবার ডিসি সম্মেলনের নজির আছে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের সম্মেলেনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে আলোচনার জন্য ২৪৫টি প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। এর মধ্যে এই সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার মতো কিছু বিষয় বেশি গুরুত্ব পাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলেন ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। ডিসিরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠানের পরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক কার্য অধিবেশন হবে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বুধবার জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে এবং তৃতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে ডিসিরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এতে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনারাও।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত বছরের ডিসি সম্মেলনে মোট ২৪২টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল, অর্থাৎ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। বাস্তবায়নের হার ৭৩ শতাংশ। বাকি ৬৬টি প্রস্তাব এখনো বাস্তবায়নাধীন।
সম্মেলনের বিশেষ দিক তুলে ধরে সচিব জানান, এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের মাঠ প্রশাসন তৃণমূলের জনগণের ভাবনাগুলো কেন্দ্রকে অবহিত করবেন। এ আলোকে সরকারের নির্দেশনা ডিসিরা মাঠ প্রর্যায়ে নিয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, কার্য-অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরবেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/আরকেএইচ)