ফরিদপুরে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুজনের ফাঁসির আদেশ
ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী গ্রামের গৃহবধূ রাশিদা আক্তার রুশিকে (৩০) ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের হাকিম হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালতে রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- গৃহবধূর স্বামী জাহাঙ্গীর মোল্যা (৪৯) ও চুন্নু মাতুব্বর (৫০)।
রায়ের বিবরণে জানা গেছে, রাশিদার স্বামী জাহাঙ্গীর একই গ্রামের চুন্নু মাতুব্বরকে ২ লাখ টাকায় ভাড়া করেন রাশিদাকে হত্যার জন্য। ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতের কোন একসময় একই গ্রামের পূর্বপরিচিত চুন্নু মাতুব্বর ওই গৃহবধূকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। পরে চুন্নু মাতুব্বর তার আরো পাঁচজন সহযোগী নিয়ে রাশিদাকে পাশের গ্রাম দশহাজার গ্রামের এক মেহগনি বাগানে নিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে ও গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মেহগনি বাগানে গলায় রশি দিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখে।
সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী গ্রামের দেলোয়ার হোসেন মেয়ে রাশিদা আক্তার রুশির সাথে একই গ্রামের মৃত বারেক মোল্যার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্যার সাথে ২০০০ সালের জুন মাসে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা কারণে স্বামীর বাড়িতে জাহাঙ্গীর রাশিদাকে নির্যাতন করত। এরপর জাহাঙ্গীর সৌদি চলে যান। সৌদি থেকে ফিরে জাহাঙ্গীর আবার বিয়ে করেন। তখন রাশিদার ওপর আরো নির্যাতন বেড়ে যায়। পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর আবার প্রবাসে চলে গেলে রাশিদা তার বাবার বাড়ি চলে আসে ও সেখানে বসবাস শুরু করে। রাশিদা বাবার বাড়িতে বসবাসের সময় প্রতিবেশী চুন্নু মাতুব্বরের ছেলে প্রাইভেট পড়ায়। সেই সুবাদে চুন্নু মাতুব্বর রাশিদার পরিচিত হয়।
এদিকে জাহাঙ্গীর বিদেশে বসে রাশিদাকে খুন করার পরিকল্পনা করে। জাহাঙ্গীর চুন্নু মাতুব্বরকে ২ লাখ টাকায় ভাড়া করে রাশিদাকে হত্যার জন্য। চুন্নু মাতুব্বর ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে রাশিদাকে ধর্ষণ ও গলাটিপে হত্যা করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি স্বপন পাল বলেন, রাশিদাকে হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্বামী জাহাঙ্গীর মোল্যা (৪৯) ও ধর্ষণ ও হত্যার দায় শিকার করে আদালতে জাবানবন্দি দেওয়ায় চুন্নু মাতুব্বরকে (৫০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। রাশিদার স্বামী সৌদি আরবে পলাতক রয়েছে এবং চুন্নু মাতুব্বরও পলাতক রয়েছে।
এ মামলায় পাঁচ আসামি হত্যায় সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের বেখসুর খালাস দেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুইট মোল্যা, শাহিন মোল্যা, কামরুল মোল্যা, রশিদ মোল্যা, চান্দ মোল্যা।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী বিমল তুলশিয়ান বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছে। তারা আদালতে সমর্পন করলে আমরা পরবর্তী বিষয়ে বিবেচনা করব। আদালত বাকি আসামিদের খালাস প্রদান করায় আমরা খুশি।
(ঢাকাটাইমস/০১মার্চ/এলএ)