ঘুস খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করিনি: ঝালকাঠিতে প্রকৌশলীকে ক্ষুব্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর ১২টা। ঝালকাঠির ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন লিমিটেড (ওজোপাডিকো) অফিসে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। এ সময় ছুটে আসেন এক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকে পড়েন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কক্ষে। তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান, রেমেলের চার দিন পার হলেও এখনো কেন তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি।

বিদ্যুৎ লাইন সংস্কার না করায় তীব্র গরমের সঙ্গে পানি বঞ্চিত থাকা এই মুক্তিযোদ্ধা রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকেন। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি প্রকৌশলীকে বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব কি ঘুস খাওয়া? ঘুস খাওয়ার জন্য কি দেশ স্বাধীন করেছি?’ পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে প্রকৌশলীকে বলে চলে যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার এ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম খন্দকার শফিকুল আলম (৭০)। কৃষ্ণকাঠি এলাকায় তিনিসহ দুই শতাধিক পরিবার এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় ওজোপাডিকোর দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমেলের তাণ্ডবে ঝালকাঠি জেলার অধিকাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা পড়ে অনেক বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ৬ দিন পার হলেও নিচু অঞ্চলে এখনো পানি জমে আছে। কয়েকশ মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে ভেসে মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্যজীবীরা। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও টানা চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বঞ্চিত রয়েছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঝড়ে পৌর শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গাছপালা এবং বিদ্যুৎ খুঁটি উপড়ে পড়েছে। যে কারণে শ্রমিক ভাড়া করেও সব স্থানে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরই পুরো কাজ সম্পন্ন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর আওতায় ২৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে রেমেলের ৭২ ঘণ্টা পর বুধবার রাতে জেলা শহরে অর্ধেক সংখ্যক গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩১মে/প্রতিনিধি/পিএস)