সাংবাদিকদের কন্ঠরোধে ৩২টি আইন থাকলেও সুরক্ষায় কোনো আইন নেই: কাদের গনি চৌধুরী

সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা আজ চরম হুমকির মুখে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএফইউজের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দেশে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধে ৩২টি আইন রয়েছে, অথচ সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি আইনও নেই।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউজ নারায়ণগঞ্জের সম্পাদক শাহজান শামীম।
“প্রতিদিন দুটি সূর্য উদিত হয়— প্রভাত সূর্য ও সংবাদ” উল্লেখ করে কাদের গনি বলেন, সংবাদ সমাজের দর্পণ, যেখানে প্রতিফলিত হয় সমাজের প্রকৃত চিত্র। একজন সাংবাদিককে হতে হয় নির্ভীক, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার, আর সেজন্যই সাংবাদিকরা সমাজের ‘ওয়াচডগ’।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের পেশায় থেকে প্রতিনিয়ত নিপীড়ন, হুমকি, হয়রানি সহ্য করতে হয়। কখনো পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়, কখনো রাজনৈতিক নেতাদের হুমকি, আবার কখনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের আক্রমণের শিকার হতে হয়।’
সেলফ সেন্সরশিপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘নানাবিধ নিপীড়নের ভয়ে সাংবাদিকরা অনেক সময় তথ্য জেনেও চুপ থাকেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিশেষ করে ৫৭ ধারা ব্যবহার করে বহু সাংবাদিককে হয়রানি করা হয়েছে। এতে সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’
সাংবাদিকদের রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করে কাদের গনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের সুশাসন নিশ্চিত করতে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে। সংবাদমাধ্যম না থাকলে সমাজের অনেক অন্যায় প্রকাশই পেত না। যেমন—সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে কালের কণ্ঠ-এ প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পরেই প্রশাসনের টনক নড়ে।’
সাংবাদিকদের এ নেতা আরো বলেন, ‘সাংবাদিক কোনো দলের নয়, কোনো ব্যক্তির স্বার্থরক্ষাকারী নয়। সাংবাদিকদের কাজ হলো নিরপেক্ষভাবে সত্য ও সঠিক তথ্য তুলে ধরা। রাষ্ট্রকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোই প্রকৃত সাংবাদিকতার মূল দায়িত্ব।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- এডিসি আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন ও আবুল কালাম, আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন, মোরসালিন বাবলা, মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, মাহবুব আলম শাহসহ আরও অনেকে।
(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এলএম/এমআর)

মন্তব্য করুন