সংগীতশিল্পী জীনাত রেহানা আর নেই

বাংলাদেশের সংগীতজগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জীনাত রেহানা আর নেই। বুধবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জনপ্রিয় ও প্রখ্যাত এই কণ্ঠশিল্পী।
দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০-এর বেশি। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
জীনাত রেহানার মৃত্যু সংবাদটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি এবং নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আজ সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জীনাত রেহানার স্বামী ছিলেন দেশের খ্যাতিমান টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ, যিনি এর আগেই প্রয়াত হয়েছেন।
আজ বাদ যোহর ঢাকার গুলশানের আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেল ৩টায় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজার পর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেন জীনাত রেহানা। মাত্র চার বছর পর, ১৯৬৮ সালে তার গাওয়া ‘সাগরের তীর থেকে’ গানটি শ্রোতাদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং তাকে এনে দেয় ব্যাপক পরিচিতি।
১৯৬৫ সালেই তিনি টেলিভিশনের শিল্পী হিসেবেও কাজ শুরু করেন। যদিও পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় তাকে সংগীতে নিয়মিত পাওয়া যায়নি, তবুও তার গাওয়া গানগুলো আজও সমান জনপ্রিয়।
জীনাত রেহানা আধুনিক গান, আধ্যাত্মিক সংগীত এবং ছোটদের গান—তিন ক্ষেত্রেই রেখেছেন অনন্য অবদান। তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘একটি ফুল আর একটি পাখি বলতো কি নামে তোমায় ডাকি’, ‘আমি কাকন দিয়ে ডেকেছিলেম মুখে লজ্জা ছিল বলে’, ‘কপালে তো টিকলি পরবো না’, ‘আমি যার কথা ভাবছি মনে আনমনে’, ‘আমায় যদি ডাকো কাছে’, ‘কণ্ঠবীণা’, ‘মনে রেখো, স্মৃতি থেকে’ ইত্যাদি।
তার কণ্ঠে গান পাওয়া না গেলেও, অল্প সংখ্যক গান দিয়েই জীনাত রেহানা বাংলা সংগীতে গড়ে তুলেছেন এক স্থায়ী ছাপ। তার মৃত্যুতে বাংলা সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোক। সংগীতবোদ্ধারা বলছেন, তিনি ছিলেন এক বহুমাত্রিক প্রতিভার নাম, যিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ছুঁয়ে গেছেন তার কণ্ঠে।
(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/আরকে)

মন্তব্য করুন