লঙ্কান ঘূর্ণিতে ৭৭ রানে হারল বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কাকে আড়াইশর নিচে আটকে রেখে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। রান তাড়ায় শুরুটাও দারুণ ছিল তাদের। কিন্তু হঠাৎ এক ধসে ৭৭ রানে হেরে গেল তারা।
২৪৫ রান তাড়ায় ১ উইকেটে ১০০ রান ছিল বাংলাদেশের। এরপর ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইনআপ। এরপর জাকের আলী লড়াই করলেও সেটা শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৬৭ রানে গুটিয়ে ৭৭ রানে হারলো বাংলাদেশ।
একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৬৪ বলে ৫১ রানের ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমিয়েছেন জাকের আলি। তাকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
এক উইকেট হারিয়ে দলীয় শতক স্পর্শ করেছিল বাংলাদেশ। দারুণ শুরুর পর হুট করেই ধসে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং। এক উইকেটে ১০০ রান থেকে ১০৫ এ যেতেই সাজঘরে ফেরেন আরো ছয় ব্যাটার। অর্থাৎ, ৫ রান যোগ করতে গিয়ে ৭ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। ইমন উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৩ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তিনে নেমে তামিমকে ভালো সঙ্গ দিচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুজনের জুটিতে জয়ের পথেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারেই দলীয় শত রান স্পর্শ করেছিল বাংলাদেশ। তবে হঠাৎ রান আউটে কাটা পড়েন শান্ত। ২৬ বলে ২৩ রান করেছেন তিনি।
শান্ত ফেরার পরই ধ্বস নামে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৫ রান যোগ করতেই সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের আরো ৬ ব্যাটার। লিটন দাস, তানজিদ তামিম, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদের সবাই ব্যর্থ ছিলেন। তাদের মধ্যে লিটন, মিরাজ ও তাসকিন ডাক খেয়েছেন।
শেষদিকে একাই লড়াই জিইয়ে রেখেছিলেন জাকের আলি অনিক। তবে তার হাফ-সেঞ্চুরির ছোঁয়া ইনিংসও বাংলাদেশের জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি। শেষমেশ ৭৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। জাকের ব্যাট থেকে ৫১ রান এসেছে।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে হাসারাঙ্গা নেন ৪ উইকেট। দুই হাতে বোলিং করে কামিন্দু মেন্ডিসের শিকার ৩টি।
এর আগে, কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খেল শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় ওভারেই পাথুম নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান তানজিম সাকিব। ৮ বলে ০ রানে সাজঘরে ফেরেন নিশাঙ্কা।
পরের ওভারে আরেক ওপেনার নিশান মাদুশকাকে বোল্ড করে দেন তাসকিন আহমেদ। ১৩ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১১ রানে ২ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে চারে নামা কামিন্দু মেন্ডিসও ৪ বল খেলে কোনো রান না করেই তাসকিনের বলে আউট হয়ে ফেরেন।
মাত্র ২৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। তবে সেই চাপ সামাল দেন কুশল মেন্ডিস ও অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। দুজনে মিলে গড়েন গুরুত্বপূর্ণ জুটি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান কুশল, তবে ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে ৪৩ বলে ৪৫ রান করে তানভীর ইসলামের বলে আউট হন তিনি। দলীয় রান তখন ৮৯।
অন্যদিকে একপ্রান্ত ধরে ব্যাট করে যান আসালাঙ্কা। তার ব্যাটে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে শ্রীলঙ্কা। ছয় নম্বরে নামা জানিথ লিয়ানাগে ৪০ বলে ২৯ রান করে শান্তর বলে আউট হন। এরপর আসালাঙ্কার সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়েন মিলান রাথনায়েকে (২২ রান) ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (২২ রান)। শেষ দিকে ঝড় তোলেন আসালাঙ্কা। পূর্ণ করেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। খেলেন ১২৩ বলে ১০৬ রানের অনবদ্য ইনিংস।
তবে ইনিংসের শেষ ওভারে তানজিম হাসান সাকিব ফেরান তাকে। এরপর একই ওভারে রানআউট হন ঈশান মালিঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ৪৮.৫ ওভারে ২৪৪ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। তানজিম হাসান সাকিব নেন ৩ উইকেট। তানভীর ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত পেয়েছেন একটি করে উইকেট।
(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/এলকে)

মন্তব্য করুন