যুবদল নেতা মনিরের ‘বার কাণ্ড’: মদ্যপান, হুমকি, হামলা—শেষমেশ বহিষ্কার

রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ‘জাকারিয়া হোটেল-রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার’-এ ভাঙচুর ও কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগের ঘটনায় যুবদল নেতা মনির খানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।
বৃহস্পতিবার রাতে সংগঠনের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল হক তুহিন চিঠি দিয়ে তাকে বহিষ্কার করেন।
এর আগে ৩০ জুন রাতে মহাখালীর ওই বারে গিয়ে মদ্যপান করেন মনির খান। নিজেকে বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক পরিচয়ে সেখানকার একটি ভিআইপি রুম ভাড়া চান। তবে তখন সব ভিআইপি কক্ষ পূর্ণ থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষ তার অনুরোধ রাখতে পারেনি। পরে মনির হোটেলের বারে বসে খাবার ও মদ্যপান করেন। খাওয়ার পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে ‘ডিসকাউন্ট’ দাবি করলে কর্তৃপক্ষ বিল কমিয়ে দেয়। বিল পরিশোধের পর মনির খান ক্ষুব্ধ হয়ে ভিআইপি রুম না পাওয়ায় হোটেল স্টাফদের হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এরপরের দিন (১ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনার ধারাবাহিকতায় লিটন চৌধুরী নাহিদ নামের এক ব্যক্তি—যিনি মনির খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত—জাকারিয়া হোটেলে প্রবেশ করেন এবং হঠাৎ একটি গ্লাস ছুঁড়ে ভেঙে ফেলেন। তিনি বারের কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মনির ভাই তোদের হোটেলে আসছিল, তোরা মনির ভাইকে ভিআইপি কেবিন না দিয়ে অসম্মান করেছিস, চিনে রাখিস।’ এরপর তিনি ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি বার ও রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালিয়ে কর্মচারীদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলায় কর্মচারীদের হাত, পা, বুক, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে বলেন, যদি এই বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়, তবে হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং আরও বড় ক্ষতি করা হবে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে মনির খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘৩০ জুন হোটেলে গিয়েছিলাম এবং রুম না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গালমন্দ করি। তবে ১ জুলাই ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মনির খানকে দল থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী নানা অনাচারের কারণে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আওতাধীন বনানী থানার আহ্বায়ক মনির হোসেনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/এসএস)

মন্তব্য করুন