গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি নৃশংসতা ও নির্বিচার হামলা যেন থামছেই না। পুরো গাজা এলাকায় মানুষের লাশের সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে। মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছে গোটা গাজা এলাকা। দখলদার ইসরায়েলের হামলায় শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আরও ৭৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনারা গাজার খান ইউনিস, নুসেইরাত এবং গাজা সিটিসহ অন্যান্য জায়গায় হামলা চালালে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। এদিকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যেই গাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করে যাচ্ছে দখলদার বাহিনী।
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজা সিটিতে একটি স্কুল ও একটি আবাসিক ভবনে বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। স্কুলে ৯ জন নিহত হয়েছেন। একজন শোকাহত ব্যক্তি কাঁদছেন তাদের প্রিয়জনদের জানাজায়, যাদের ইসরায়েলের একটি বিমান হামলায় হত্যা করা হয়েছে। এই হামলা ছিল একটি স্কুলে, যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষরা আশ্রয় নিয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছে গাজা সিটির আল-আহলি আরব হাসপাতালে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় ঘোষণা করেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে একটি দল কাতারে পাঠানো হবে, যদিও এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, লোকজন এতটাই আতঙ্কিত যে, নিহতদের দেহ তুলতে গিয়েও গুলির ভয়ে দেরি করছিল।
তিনি বলেন, “মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে। কেউ কেউ একবেলা না খেয়ে সন্তানদের খাওয়াচ্ছে। এই GHF শুধু নামেই ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে, আসলে এটি একধরনের প্রতারণা – মানুষের ক্ষুধা ও মরিয়া অবস্থার সুযোগ নিচ্ছে।”
বিশ্ব খাদ্য সংস্থার উপ-পরিচালক চার্লস স্কাউ বলেন, “আমি এর আগে এত ভয়াবহ অবস্থা কোথাও দেখিনি। মানুষ শুধু খাবার পেতে গিয়ে মারা যাচ্ছে।”
তিনি আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আগের যুদ্ধবিরতিতে ৪২ দিনে ৮,০০০ ট্রাক খাদ্য পৌঁছাতে পেরেছিলাম। এখনো পারব, তবে সব পথ খুলতে হবে এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৩৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৯৫৭ জন। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে এবং অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে।
(ঢাকাটাইমস/৬ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন