নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই: গয়েশ্বর

সংসদ নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো নেই বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। শনিবার বিকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এই হুশিয়ারি দেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, নির্বাচন করতে হবে, নির্বাচন আটকানোর শক্তি কারো হাতে নাই যদি আমরা নামি। যারা বলে ১৬ বছর আমরা কিছু করতে পারি নাই। তাদেরকে বলব, আমরা এখন ১৬ দিনে তা দেখিয়ে দিতে পারি আমরা দেখাবো না।
তিনি বলেন, একজন ভদ্রলোক মানুষ ওয়াদা করেছেন, তিনি তার ওয়াদা পূরণ করবেন, যথাসময়ে নির্বাচন দেবে এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা ধৈর্য ধরে আছি।
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, শিক্ষা আর স্বাস্থ্য দুইটা দখল করছে জামায়াত। ওখানে আর কারো কোন ঠাঁই নাই। মাঝে মধ্যে অনেকে বলে ভারতের দালাল-টালাল। যারা ভারতের দালালি করে তারাই ভারতের দালাল।
যারা নির্বাচন চাই না, সংস্কার সংস্কার করে এটা-সেটা এগুলো তো ভারতের দালাল। এরাই কিন্তু আওয়ামী লীগের জঘন্য লোকদের তাদের দলের মধ্যে সদস্য বানাইতেছে গোপনে খবর রাখে না। এই পরাগ মন্ডলরে যে অপহরণ করল আপনারা জানেন সবাই তার নাম সে এখন শুনি জামায়াতের নেতা। এখন জামায়াত কি জিনিস আপনারা একটু চিনে রাখেন।
মাদক ও অস্ত্র মুক্ত কেরানীগঞ্জ গড়ে তুলতে ‘উন্নয়নের একটি বৃহৎ পরিকল্পনা’ প্রণয়ণ করার কথাও জানান গয়েশ্বর।
কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার শুভাঢ্যা গার্লস স্কুল প্রাঙ্গনে দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে ‘যথা সময়ে সংস্কার ও দ্রুত সময়ের নির্বাচন’ এর দাবিতে এই সমাবেশ হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এই সমাবেশ অংশ নেয়।
বক্তারা আগামী ঢাকা-৩ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য আহ্বান জানান।
‘১৬ বছর ওদের শান্তি সমাবেশ’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান বলেন, অনেকদিন পর একটি সমাবেশে এখানে বক্তৃতা দিতে আসলাম। গত ১৬টা বছর বিএনপির মিটিং করলে তারাও পাশেই ডাকা হতো আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ। আহা রে শান্তি।
শান্তি সমাবেশের আসতো কারা? এলাকার গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, মসজিদের ইমাম সাহেব, মন্দিরের পুরোহিত। না। শান্তি সমাবেশে আসতো এলাকার সবচেয়ে বড় গুন্ডা, এলাকার সবচেয়ে বড় যে মাস্তান তারাই ওই শান্তি সমাবেশ আসতো। তারা যে পথ দিয়ে আসতো খুটখাট আওয়াজ হতো। সেই আওয়াজ অস্ত্রের আওয়াজ। শেখ হাসিনার আমলে শান্তির মা মারা গিয়েছিলেন.. দাফন করে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
বিগত ১৬ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীর ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এখন কেউ কেউ বলে নাকি বিএনপি কি করেছে?
হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার দিকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাঁকিয়ে আছি। এদেশের জনগণ অপক্ষোয় আছে।
নির্বাচনের নিয়ে যদি কোনো টালবাহানা করা হয়, আবার যদি ঝামেলা করা হয় আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে প্রয়োজনে আবারো রাজপথে নামব।
‘লন্ডন বৈঠকের অনেকের গা জ্বালা’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দলের নেতা তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে ওয়ান টু ওয়ান দেড় ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দলের নেতার সাথে বৈঠক করবেন এটাই স্বাভাবিক।
এই বৈঠকে অনেকের গা জ্বলছে। কোনো লাভ নেই। দেশের প্রধান ও সবচেয়ে জনপ্রিয় দলের সাথে বৈঠক হবে এটাই জনগন আশা করেছি এবং সেটাই হয়েছে।
‘দুই পরাজিত শক্তির ম্যাগসাস’
বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, গতকাল দেখলাম জামায়াতের নেতা বলেছেন, যেনো তেনোভাবে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আরে ভাই, যেনোতেনোভাবে নির্বাচনের ইতিহাস জামায়াতে ইসলামীর। এই জামায়াতই ’৮৬ সালে স্বৈরাচারের ডাকে নির্বাচনে গেছে। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করেছিল।
জামায়াতে ইসলামী বলেন, বিএনপি নাকি সারাদেশে দখলবাজি করেছে। আমরা বলি, কাঁচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল মারবেন না। দেশের মানুষ দেখেছে ৫ আগস্টের পরে প্রথম ব্যাংক ডাকাতি করেছে কারা করেছে? এই জামায়াতে ইসলামী। ৫ আগস্টের পরে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কারা দখল করেছে? এই জামায়াতে ইসলামী। আজকে ’২৪‘র পরাজিত শক্তি এবং ’৭১‘র পরাজিত শক্তি এই দুই শক্তির ম্যাগসাস আমরা দেখতে পারছি।
‘নির্বাচন নিয়ে গড়িমশি মেনে নেয়া হবে না’
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, জনগণ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, ভোট চায়। এই নির্বাচন আর দাবি নয়, এটা এখন আমাদের আদায় করে নিতে হবে। এটা নিয়ে গড়িমশি মেনে নেয়া হবে না।
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবুর সঞ্চালনায় সমাবেশে কেরানীগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
(ঢাকা টাইমস/০৫জুলাই/জেবি/এসএ)

মন্তব্য করুন