চরমোনাই পীরকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, ছাত্রদল নেতাকে হুমকি!

চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমকে নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় ঢাকা উত্তর ছাত্রদলের নেতা শামীম সিকদারকে লাগাতার হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইসলামী আন্দোলনের ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের একাধিক নেতা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই ছাত্রদল নেতা নিজে একটি ভিডিও বার্তায় বিষয়টি প্রকাশ করে বলেন, গত দুই দিন ধরে তাকে উদ্দেশ করে একাধিক নম্বর থেকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় বা ঢাকা মহানগর নেতারা এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি।
সম্প্রতি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে চরমোনাই পীরের কিছু বক্তব্য বিএনপিসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
শামীম সিকদার বলেন, ‘আমি শুধু বলেছি “চরমোনাই পীর যেভাবে সরকারদলীয় রাজনীতিবিদদের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, তাতে মনে হয় তিনি আর আলেম নেই। বরং রাজনৈতিক দালাল হয়ে গেছেন।” এই বক্তব্যের পরপরই আমাকে ফোনে হুমকি দেওয়া শুরু হয়।’
তবে যারা হুমকি দিয়েছেন তারা রানাপাশার হলেও তিনি তাদের চেনেন না বলে জানান শামীম। বলেন, ‘তারা নিজে থেকে পরিচয় দিয়ে বলেছে, “তুই কোথায় থাকিস জানি, তোর চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে বলার সাহস হলো কীভাবে”?’
ছাত্রদল নেতা এই ঘটনাকে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছেন। ফোনালাপ ও ভয়েস রেকর্ড সংরক্ষণ করেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফেসবুকে চরমোনাই পীরকে নিয়ে মন্তব্য করায় তার অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আর যিনি (ছাত্রদল নেতা) এই ধরনের মন্তব্য করেছেন, তার বাবাও পীরের ভক্ত। এ কারণে ফেসবুকে মন্তব্য-লেখালেখি বন্ধ করতে ইসলামী আন্দোলনের অনেকে তাকে ফোন করেন।
ছাত্রদল নেতা শামীমের কাছে থাকা ফোন রেকর্ডে দেখা যায়, যারা ফোন করেছেন তারা শামীমের সঙ্গে রাগান্বিত স্বরে কথা বলছেন এবং পূর্বপরিচিতি। এই তালিকায় রয়েছেন রানাপাশা ইউনিয়নের ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ফারুক হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মল্লিক, একই ইউনিয়নের ইসলামি যুব আন্দোলনের সভাপতি জাকির হোসেন।
শামীম সিকদার বলেন, ‘আমি এই রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করেছি। আমি কাউকে গালাগাল করিনি। কিন্তু মত প্রকাশের কারণে প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছি। আমার যদি কিছু হয়, এর দায় রানাপাশা ইউনিয়নের চরমোনাই অনুসারীরা নেবে।’
বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বা পিআর নির্বাচন একটি বহুল আলোচিত বিষয়। গত ১ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে এই দাবি জোরালোভাবে উঠলে তা আরও বেশি আলোচনায় আসে।
এই পদ্ধতির নির্বাচনে দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির অমতের বিষয়ে চরমোনাই পীর বিএনপির মনোভাব নিয়ে অন্য রকম সন্দেহ করে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যে কী কারণে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে, বিএনপি হয়তো এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করছে বা স্বপ্ন লালন করছে। কিন্তু এ পদ্ধতিতে এককভাবে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এজন্য হয়তো তারা এর বিরোধিতা করছে।’
(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/মোআ)

মন্তব্য করুন