পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না । সংসদীয় আসনে পছন্দের প্রার্থী এমপি হতে পারবে না। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দল এমপি নির্বাচন করবে, আর দল এমপি নির্বাচন করলে আরও বেশি স্বৈরশাসক তৈরি হবে।
তিনি বৃহস্পতিবার রংপুরে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) রংপুরের আয়োজনে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, জুলাই-আগস্টে যে ঐতিহাসিক ও রক্তঝরা আন্দোলন হয়ে গেছে, যে আন্দোলনে ১৪শ লোকের মতো জীবন দিয়েছে, আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজরা জীবন দিয়েছে, বিগত ১৬ বছর কি দুর্বিষহ দিন গেছে আমাদের। বিগত ফ্যাসিবাদের সময়ে কোনো তরুণ রাতে ঘুমাতে পারেনি, কোনো তরুণের পরিবার শান্তিতে থাকতে পারেনি, কার সন্তানকে কখন ধরে নিয়ে যাবে, কাকে অদৃশ্য করে দিবে, কার লাশ তিস্তার পাড়ে, পদ্মার পাড়ে, শীতলক্ষার পাড়ে, বুড়িগঙ্গার পাড়ে পড়ে থাকবে তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। হত্যার ঘাতকের সংকীর্ণতার পথ দিয়েই আমাদের ষোল বছর পাড়ি দিতে হয়েছে। শেখ হাসিনার করাল গ্রাস থেকে কেউ রেহাই পায়নি, তার ভয়াবহ থাবা থেকে কেউ রক্ষা পায়নি।
তিনি বলেন, এ রংপুর অঞ্চলের মানুষের গর্ব আবু সাঈদ। কিভাবে শার্টের বুতাম খুলে সেই ঘাতকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। ছোট ছোট বাচ্চারা কিভাবে জীবন দিয়েছিল। আমরা কি আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজদের ভুলে যাব। যাদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদেরকে কী আমরা ভুলে যাব। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে মতবেদ থাকবে, আমরা পরস্পরে তর্ক করবো, বিবাদ করবো কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে দেশের স্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য দরকার। তা না হলে ফ্যাসিবাদ শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সেই পতিত হাসিনা আবার ফিরে আসার পথ তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, কয়দিন আগে গুম কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্ট পড়লে লোম দাঁড়িয়ে যাবে। কিভাবে ধরে নিয়ে লাঠি পেটা করে, হাত-পায়ের নখ তুলে কিভাবে নির্যাতন করেছে। আবার কিভাবে তাদের গুম করে রেখেছে। নারীদের তাদের মায়ের সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেছে এ রক্ত পিপাসুরা। তারা কি আবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসতে পারে? দেশের স্বার্থে, নিজের সন্তানদের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল সহ সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন, রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শরীফুল ইসলাম মন্ডলসহ নেতৃবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/৩ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন