সরকারি ঘর দেওয়ার নামে ভিক্ষুকের টাকা আত্মসাৎ ইউপি চেয়ারম্যানের!

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
  প্রকাশিত : ০২ জুন ২০২৪, ২০:১৪| আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ২০:৩৭
অ- অ+

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বামীকে হারান ৮২ বছর বয়সি কুটি খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে লড়াই করে আসছেন। তবুও বিয়ে করেননি। পেটের তাগিদে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করছেন। বসবাস করছেন প্রতিবেশীর ঝুপড়ি ঘরে। এমন অবস্থায় শেষ বয়সে একটি সরকারি ঘরে মাথা গোঁজার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য ২ বছর আগে ভিক্ষা করে জমানো ১৫ হাজার টাকা তুলে দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সাহেব ফকিরের হাতে।

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এখনো মেলেনি তার সরকারি ঘর। এমনকি ফেরত পাননি টাকা। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো ভাতার তালিকায়ও তার নাম ওঠেনি।

ভুক্তভোগী কুটি খাতুনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তিনি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা চরযশোরদী ইউনিয়নের বড় শ্রীবরদী গ্রামের মৃত ইউসুফ মাতুব্বরের স্ত্রী।

কুটি খাতুনের প্রতিবেশীরা জানান, মুক্তিযুদ্ধের বছর মারা যান কুটি খাতুনের স্বামী। তার দুটি ছেলে সন্তান থাকলেও তারা কেউ তাকে দেখাশোনা করেন না। সন্তানদের মধ্যে একজন নিখোঁজ আরেক জন ঢাকায় থাকেন। স্বামীর সম্পত্তি বলতে এক টুকরো ভিটা থাকলেও মাথা গোঁজার মতো ঘর নেই। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীর একটি ঝুপড়ি ঘরে থেকে ভিক্ষা করে পেট চালান। বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তার জীবন।

তাদের মতে, ঘর দেওয়ার কথা বলে এমন একজন অসহায় মহিলার কাছ থেকে টাকা নেওয়া কাজটা ভালো করেননি।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে এলাকায়।

ভুক্তভোগী কুটি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে ২ বছর আগে চরযশোরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সাহেব ফকির আমার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু টাকা নিলেও ঘর দেয়নি। আমি ঘরের জন্য অনেক ঘুরেছি, লাভ হয়নি। এখন দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে বিচার চাইছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির নাসির খান বলেন, ওই বৃদ্ধা মহিলা বারবার আমার কাছে এসে ঘর ও টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। আমি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি একাধিকবার অবগত করলেও তিনি গুরুত্ব দেননি।

জানতে চাইলে রবিবার (২ জুন) বিকালে অভিযুক্ত চরযশোরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান সাহেব ফকির বলেন, কুটি খাতুনকে আমি চিনিই না। তবে শুনেছি, সরকারি ঘরের জন্য ওই মহিলা পাচী নামে তার আত্মীয়কে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা পাচী ফেরতও দিয়েছে। এখন আমার নামে অপবাদ দিচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ায় আমি ওই মহিলার নামে মামলা করবো।

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাফী বিন কবির বলেন, ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি, শুনা কথায় তো আর কান দেওয়ায় যাবে না। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/০২জুন/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চাঁদপুরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬২ হাজার পশু
পূবাইলে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
এবার সস্ত্রীক কারাগারে সেই মিল্টন সমাদ্দার
বোট ওয়ার্কশপ কোস্ট গার্ডের আধুনিকায়নে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা