স্মৃতিশক্তি ও কাজের গতি বাড়ায় যেসব প্রাকৃতিক ভেষজ পানীয়

স্বাস্থ্য রক্ষা ও পরিচর্যায় ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহারের ইতিহাস মানব সভ্যতার ইতিহাসের মতোই সুপ্রাচীন। সৃষ্টির শুরু থেকেই পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ভেষজ ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। প্রাকৃতিক ভেষজ কিছু পানীয় স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং কাজের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। গ্রিন টি, কফি, বিটে রস, কাঁচা হলুদের পানি, তুলসির ভেষজ পানীয় শরীরকে প্রাকৃতিক উপায়ে সুরক্ষা দিতে পারে। বিশেষ করে গরমের এই সময় পানিশূন্যতা হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকে যায়। শরীরে পানি কমে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এসব পানীয় পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করে এবং স্মৃতিশক্তি ও কাজের গতি বাড়ায়। চটজলদি চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো মস্তিষ্কের পক্ষে স্বাস্থ্যকর কয়েকটি পানীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বিটের রস
বিটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট থাকে, যা দেহের নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ‘দ্য জার্নাল অফ জ়েরেন্টোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে চিন্তাশক্তির বৃদ্ধি করে বিটের রস। সপ্তাহে তিন দিন ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিলিটার বিটের রস খেলে তা স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে উপকারী।
কাঁচা হলুদের পানি
কাঁচা হলুদ এবং গোলমরিচ গরম জলে ফুটিয়ে পান করা যেতে পারে। এই পানীয়ের মধ্যে কারকিউমিন নামে এক ধরনে যৌগ থাকে, যা দেহে প্রদাহ বন্ধ করতে সহায্য করে। কাঁচা হলুদ এবং গোলমরিচের পানীয়টির মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, যা মস্তিষ্কের পক্ষে উপকারী। এই পানীয়ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
গ্রিন টির মধ্যে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে। ফলে কাজের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়। গ্রিন টির মধ্যে যে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, তা ধমনীকে শিথিল রাখে। ‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই চা মস্তিষ্কের বিবিধ বিষয় আয়ত্ত করার প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি, স্মৃতিভ্রমও দূর করে।
তুলসী
আয়ুর্বেদে তুলসীর একাধিক গুণের উল্লেখ রয়েছে। বলা হয় শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে তুলসীর বিশেষ ভূমিকায় রয়েছে। আমেরিকার ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর একাধিক গবেষণায় তুলসীর বহুমুখী গুণের উল্লেখ রয়েছে। উদ্বেগ এবং অবসাদ কাটাতে তুলসীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মস্তিষ্কে ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে তুলসী। গরম জলে তুলসীপাতা, আদা দিয়ে ফুটিয়ে চায়ের মতো তা পান করা যায়। স্বাদের জন্য এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
কফি
কফির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন থাকে, যা মস্তিষ্কে এক ধরনের উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। কফির মধ্যে উপস্থিত ক্লোরেজেনিক অ্যাসিড মস্তিষ্কের জটিল হিসাব জাতীয় কাজে । সম্প্রতি ‘প্লস মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কাপ কফি খেলে হৃদ্রোগ এবং স্মৃতিভ্রম শতকরা ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/১৭ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন