বীরের রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায়: খালেদা জিয়া

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশে নতুন করে গণতন্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সুযোগ এসেছে জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছে, দ্রুতই তা সম্পন্ন করতে হবে।
একই সঙ্গে ঐক্য বজায় রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেছেন, বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির `গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তাগিদ দেন তিনি।
চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভাটি আয়োজিত হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির চেয়ারপাসন বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতন, অত্যাচার, গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম, খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ শাসকগোষ্ঠী। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে, সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে বাংলাদেশ গড়বার।’
জুলাই আন্দোলনে শহীদদের আন্তরিক শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে।’
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার যারা হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, ‘দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারের পুনর্বাসন ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, নতুন করে গণতন্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার, তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
‘সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে’- এ কথা উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে বীরের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রাখতে হবে।’
সবাইকে আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই মিলে শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করি, বাস্তবায়িত করি কোটি মানুষের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্নকে।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা, শহীদ পরিবার, আহত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ৬৩টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, বুদ্ধিজীবী, সিনিয়র সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষও উপস্থিত ছিলেন। শহীদ পরিবারকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা দেওয়া হয়। অভ্যুত্থানের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
(ঢাকাটাইমস/১জুলাই/এলএম/মোআ)

মন্তব্য করুন