শহীদ আবু সাঈদ ও প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম

প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য এবং শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটাক্ষ করার ঘটনায় সরকার প্রশাসনের কর্মকর্তা তাপসী তাবাসসুমকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে।
বুধবার (২ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তাপসী তাবাসসুম লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার ছিলেন। গত বছরের ৬ অক্টোবর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি, যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে কটাক্ষ করা হয়।
তাপসী তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটন পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে... কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে আপনার, মহাশয়!... আপনি ‘রাজাকার–রাজাকার’ স্লোগানটার অর্থ এত অল্প সময়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এই স্ট্যাটাসটি সামাজিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। একইসঙ্গে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদ সম্পর্কেও তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
ঘটনার পরপরই তাকে ওএসডি করা হয় এবং পরদিন সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। পাশাপাশি সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বরখাস্তের পর তাপসী তাবাসসুমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ না নিয়ে লিখিত জবাব দেন। তবে তার ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাপসীর বিরুদ্ধে গুরুদণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর সুযোগ দিয়েও তার জবাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় বিভাগীয় মামলা, তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য নথিপত্র বিশ্লেষণ করে তাকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
সরকারি কর্ম কমিশন এ বিষয়ে একমত পোষণ করে এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরিচ্যুতির গুরুদণ্ড দেওয়া হয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তাপসী তাবাসসুমের বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে।

মন্তব্য করুন