ভোটে দলগুলোর অংশগ্রহণের ব্যাপারে কমিশন মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না: সিইসি

‘আগামীতে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে’ বললেও নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের ব্যাপারে মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ভোটার দিবসের র‌্যালি শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

আগ্রামী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যথার্থ হবে বলে আশা ব্যক্ত করে প্রধান সিইসি বলেন ‘২০১৪ সালে, ২০১৮ সালে কী হয়েছে সেগুলো আমরা দেখব না। আমরা সামনে এগোচ্ছি।’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কমিশন এগোচ্ছে, দলগুলো কি ভোটের দিকে এগোচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আগেও বলেছি, তাদের প্রতি আমরা বারবার আবেদন জানাচ্ছি আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের মধ্যে যদি মতপার্থক্য থাকে, সেটা আপনারা নিরসনের চেষ্টা করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন মুরব্বিয়ানা করতে পারবে না।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোটে আসার আহ্বান করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা বিনীতভাবে সব রাজনৈতিক দলকে বলব, আপনারা যেকোনো প্রকারেই হোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটকেন্দ্রগুলোয় ভারসাম্য সৃষ্টি করুন। যাতে এ ভারসাম্যের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে এক ধরনের নিরপেক্ষতা এবং যথার্থতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম, অনেক দলও ভোটে আসছে না। তাই ভোটার দিবস করে লাভটা কী- এ প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমার সহকর্মীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন যে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে মোটেই কম হয়নি। এটা সঠিক তথ্য নয়। কিছু কিছু ভোটে ভোটার উপস্থিতি কেন কম হয়েছে, আমাদের পক্ষ থেকে কমিশনার মো. আলমগীর এবং আহসান হাবিব খান বলেছেন।’

এর ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা যেটা অনুমান করেছি, বাস্তবতার নিরিখে ভোট যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, ব্যাপকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়; তখন ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে, কারণ সেখানে সময় বাকি মাত্র ১০ মাস। আর সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়নি। আপনারা ইউনিয়ন কাউন্সিলের ভোট দেখেছেন, সেখানে কিন্তু উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল। ইভিএমে ভোটে বলা হয় ধীরগতি, সেখানেও উপস্থিতি যথেষ্ট ভালো ছিল।

‘জেলা পরিষদে উপস্থিতি ছিল ৯৯ শতাংশ, সেখানে ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে ভোট হয়েছে’, বলেন সিইসি।

ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ হিসেবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বিভিন্ন কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। আবহাওয়াগত কারণ হতে পারে, দুর্যোগের কারণে হতে পারে, শীতের কারণে হতে পারে; বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ, ভোটাররা এসেছেন কিনা, তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে কিনা, তারা ভোট দিতে পেরেছেন কিনা—সেটাই বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য আমাদের কাছে।’

কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব কার- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব হচ্ছে প্রথমত ভোটারের নিজের। রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাদের সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমরা ভোটটা আয়োজন করব। আমরা ব্যালট পেপার সাপ্লাই করব, বক্স সাপ্লাই করব এবং আমরা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক যে সংস্থাগুলো আছে তাদের সোজা বলে থাকি আপনারা ভোটকেন্দ্রের চারপাশে প্রত্যাশিত যে আইনশৃঙ্খলা এবং অনুকূল পরিবেশ, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। তাই দায়িত্বটি সামগ্রিক সমন্বয়ের। এটা অনুধাবন করতে হবে। এককভাবে এ দায়িত্ব কখনোই নির্বাচন কমিশনের নয়।’

(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/এলএম/এফএ)