চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাসপাতালে রোগী রেখে কেক কাটায় ব্যস্ত চিকিৎসক!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ মার্চ ২০২৩, ১৮:১১

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রোগী না দেখে কেক কাটা নিয়ে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এতে রোগী ও স্বজনরা বিপাকে পড়েন। এতে রোগীর স্বজন ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকের মধ্যে হট্টগোল হয়। এ ঘটনা ঘটেছে বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে।

জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে জেলা শহরের দরগাপাড়া মহল্লার নাজমুল হুদার স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম (৫০) প্রায় ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় তাকে জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। এসময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটছিলেন। এ নিয়ে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসককে ডাকতে গেলে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রোগীর স্বজন এবং চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা। এসময় সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে রোগীর স্বজনদের হেনস্তা ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে শামসুন্নাহার বেগম ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

ওই গৃহবধূর স্বামী নাজমুল হুদা জানান, আমার স্ত্রী প্রায় ১০টি প্রেসারের ওষুধ খেয়ে ফেললে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি ও পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দেখি- চিকিৎসকের কক্ষের দরজা বন্ধ। ওই রুমে কয়েকজন চিকিৎসক কেককাটা নিয়ে ব্যস্ত। একাধিকবার চিকিৎসার জন্য কক্ষের দরজায় নক দিয়ে সাড়া না পেয়ে দরজায় জোরে ধাক্কা দিলে ডা. মোশফিকুর বের হয়ে এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন। এসময় ডাক্তার বলে, কি হয়েছে? আপনাদের কোন চিকিৎসা দেয়া হবে না। রোগী দেখা হবে না। এসময় ফোন বের করে ভিডিও করতে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেন ঘরে আটকে রাখতে। এমনকি পুলিশ এনে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখানো হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মোশফিকুর জানান, রোগী না দেখা ও স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। রোগী আসা মাত্রই সঠিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রোগী দেখার জন্যই জরুরি বিভাগের চিকিৎসক থাকেন।

তবে কেক কাটার বিষয়টি নিয়ে তিনি জানান, এটা কোন আনুষ্ঠানিক আয়োজন না। ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারদের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে কেক কাটা হয়, যা এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে কিছুই করা হয়নি।

জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ জানান, কেককাটার ঘটনার সময় সেবা নিতে আসা ব্যক্তির স্বজনদের সাথে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এটা কোন বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি। মাত্র উভয় পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুই পক্ষকে ডেকে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির অবসান করা হয়েছে। এছাড়াও রোগীকে সঠিকভাবে চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশীদ জানান, রোগী দেখার সময় কোন চিকিৎসক যদি কেক কেটে থাকেন, তাহলে ঠিক করেননি। তারা অন্য কোন সময়ে কেক কেটে এক বছর পালন করতে পারতেন। এটা কখনোই কাম্য নয়। চিকিৎসককে রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রাখা হয়েছে কেক কাটার জন্য নয়।

(ঢাকাটাইমস/০২মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :