মোবাইল চুরির পর মুহূর্তেই আইএমইআই পরিবর্তন করে ফেলতেন তারা

মোবাইল চুরির পর আইএমইআই পরিবর্তন করে নামিদামি মার্কেটে বিক্রিতে জড়িত একটি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের একটি দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আল আমিন, মো. দিপু, মো. আলাউদ্দিন (বাবলু) ওরফে জাপান বাবু, মো. আলী বেপারী এবং মো. ইউনুছ আলী শুভ। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় শতাধিক চোরাই মোবাইল, একটি আইএমইআই কাটার ডিভাইস ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা চোরাই মোবাইলের ডিভাইস পরিবর্তন করে যমুনা ফিউচার পার্ক এবং বসুন্ধরা মার্কেটের মতো বড় মার্কেটের দোকানে বিক্রি করতেন বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে ডিএমপি ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইমবিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এখন আর জিডি করে মানুষ তার ফোনগুলো পায় না। কারণ ফোন চুরি হওয়ার সাথে সাথে তার আইএমইআই কাটার দিয়ে আইএমআই চেঞ্জ করে ফেলে। একটি ফোন মানুষের অনেক আবেগের জায়গা।
সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধচক্রে ছিনতাইকারী থেকে শুরু করে যমুনা ফিউচার পার্কে দোকানের মালিকসহ যারা চোরাই ফোন বিক্রি করে সকল পর্যায়ের আসামি গ্রেপ্তার আছে।
ডিএমপি ডিবির একটি দল সোমবার দিবাগত রাত সাতটার দিকে রাজধানীর উত্তরখান ও যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল মাস্টার মাইন্ডসহ মো. আল আমিন, মো. দিপু, মো. আলাউদ্দিন (বাবলু) ওরফে জাপান বাবু, মো. আলী বেপারী এবংমো. ইউনুছ আলী শুভকে শতাধিক মোবাইলসহ গ্রেপ্তার করে।
সাইবার ক্রাইমের বরাত দিয়ে ওই সূত্রটি জানায়, আলাউদ্দিন বাবলু ওরফে জাপান বাবু এবং আলী ব্যাপারী উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী ইত্যাদি এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত চুরি, ছিনতাই ও পকেটমারের মতো অপরাধ করে আসছেন। বিভিন্ন রাস্তা বা যানবাহন থেকে তারা এইসব মোবাইলগুলো সংগ্রহ করতেন। আর তার সংগ্রহকৃত মোবাইলগুলো মো. ইউনুছ আলী শুভর কাছে ব্র্যান্ডভেদে চার থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রয় করতেন। শুভ এইসব মোবাইল মো. দিপুর কাছে আট থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করত।
দিপু, শুভ, শরীফ, শ্যামলসহ ও অন্যান্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন রকমের ছিনতাইকৃত মোবাইল, ল্যাপটপ, ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনে নিত। প্রতিদিন এইভাবে মোবাইল ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী সংগ্রহ করে সপ্তাহন্তে মাস্টারমাইন্ড আল-আমিন এবং শাহজাহানের কাছে ১২-১৪ হাজার টাকায় বিক্রয় করত।
গ্রেপ্তারকৃত আল-আমিনের যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকান রয়েছে এবং শাহজাহানের বসুন্ধরাসিটি শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইলের দোকান রয়েছে। আল-আমিন এইসব মোবাইল কিনে নিজস্ব ল্যাপটপ ও সফটওয়ারের মাধ্যমে আইএমইআই পরিবর্তন করে ব্যবহৃত সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন হিসেবে নিজেদের দোকানে রেখে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রয় করত। এছাড়াও সে ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে চোরাই মোবাইল বাংলাদেশে এনে বিক্রি করত।
ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/এএ

মন্তব্য করুন