যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই পরমাণু স্থাপনাগুলো খালি করা হয়েছিল: দাবি ইরানের

যুক্তরাষ্ট্রের সফল হামলার দাবি সত্ত্বেও ইরান জানিয়েছে, দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আগেই খালি করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলার ঘোষণা দেওয়ার পর ইরান এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
তবে এসব পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ নেই বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ।
দেশটির সরকারি সম্প্রচার সংস্থার একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে আইআরএনএ জানিয়েছে, ‘এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় এমন কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি রাতে সরাসরি সম্প্রচারিত এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “ট্রাম্প যেটাই বলুন না কেন, আমরা বড় ধরনের কোনো ক্ষতির মুখে পড়িনি। কারণ গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক উপাদানগুলো আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।”
আবেদিনির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, ইরান আগে থেকেই সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা করছিল এবং সে অনুযায়ী আগাম ব্যবস্থা নিয়েছিল। ফলে মার্কিন বিমান হামলায় যেসব স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে, সেগুলোতে আর তেজস্ক্রিয় বা গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক উপাদান ছিল না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইরানের কৌশলগত দূরদর্শিতার একটি বড় উদাহরণ। তারা একদিকে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সক্ষম হয়েছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও গোয়েন্দা তৎপরতার দক্ষতাও তুলে ধরেছে।
তবে এখনো পরিষ্কার নয়, ঠিক কবে নাগাদ এসব পারমাণবিক উপাদান সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং কোন স্থানে সেগুলো স্থানান্তর করা হয়েছে। ইরান এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবেই গোপন রাখা হয়েছে ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষার কৌশলের অংশ হিসেবে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র—যা মাটির ২৬২ ফুট গভীরে অবস্থিততেও ভারী বোমা ফেলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমানগুলো ইরানের আকাশসীমা ত্যাগ করে এখন দেশে ফিরে এসেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের পক্ষ থেকে ‘আগেই খালি করা হয়েছিল’ মন্তব্যটি আন্তর্জাতিক মহলে কৌতূহল ও কৌশলগত হিসাব-নিকাশকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে। এই ঘটনার গুরুত্ব শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সূচনা করেছে। পরমাণু নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা কৌশল ও আন্তর্জাতিক আইন—সব কিছু এখন প্রশ্নের মুখে।
(ঢাকাটাইমস/২২ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন