পটুয়াখালীতে চলছে শুঁটকি শুকানোর উৎসব
দেশের দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপকূলজুড়ে চলছে জেলে-মহাজনদের শুঁটকি তৈরির প্রস্তুতি। শীতের আগমনী বার্তা কড়া নাড়তেই সৈকতপাড়ে ঘর, বাঁশের মাচা তৈরি করছেন শুঁটকি ব্যবসায়ী ও জেলেরা। বর্তমানে জেলেদের এমন কর্মব্যস্ত চিত্র প্রায় প্রতিদিন চোখে পড়ছে।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত থাকে উপজেলার প্রায় ৪০টি শুঁটকি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর সমুদ্রে মাছ ধরার সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই শুরু করা হয় শুঁটকি তৈরির কার্যক্রম। প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা শুঁটকি পল্লীতে প্রায় ছয় শতাধিক নারী ও পুরুষ কাজ করছেন।
কুয়াকাটার লেম্বুর বন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকতের কুল ঘেঁষে শুকনো বালুর উপর তৈরি করা হচ্ছে সারিসারি বাঁশের মাচা ও শুঁটকি মজুদ করার ঘর। কুয়াকাটা ছাড়াও শুঁটকি তৈরির কাজ চলছে উপজেলার নিজামপুর, মহিপুর, লালুয়া, খাজুরা, দৌলতপুরসহ আরও বেশ কিছু জায়গায়।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, শুঁটকির সিংহভাগ চলে যায় জামালপুর, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রংপুর, সিলেট, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। বর্তমানে এখান থেকে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে রকমারি শুঁটকি।
বর্তমানে লইট্টা, সুরমা, ছুরি, রুপচাদা, সুন্দরি, চ্যাপা, চাপিলা, কাচকি, চ্যালা, বাইলা, বাঁশপাতা, মলা, বড় চিংড়ি, ছোট চিংড়ি, পোয়া, টোনা, ফাইস্যা, নোনা ইলিশ, ইলিশের ডিম, কাকিলা, কোরাল, লাখ্যা, রইস্যাসহ ৩৫-৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ শুঁটকি করা হয় এখানে।
কুয়াকাটার শুঁটকি ব্যবসায়ী মেহেদী হোসেন বলেন, মৌসুম চলে আসায় আমরা মাঁচা তৈরির কাজ শুরু করছি। এক সপ্তাহের মধ্যে ঘরের কাজ শেষ করেই মাছ কিনতে শুরু করবো, জেলেদের কাছ থেকে মাছ কেনার পর বাছাই করা হবে। কয়েক গে আলাদা করে মাছ থেকে ময়লা ছাড়ানো, লবণ দেওয়া, কেটে শুকাতে দেওয়া হয়, এভাবেই শুরু হয় শুঁটকির কার্যক্রম।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, কুয়াকাটায় যারা শুঁটকি তৈরি করে তারা বেশ অভিজ্ঞ। এই ব্যবসায় সাফল্য ধরে রাখতে তাদের ঋণ দেওয়ার বিষয়ে সরকারেরও একটি পরিকল্পনা আছে। গত দু’বছরে প্রায় পাঁচ হাজার ৬০০ টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছে উপজেলায়। বর্তমানে শুঁটকি তৈরির প্রস্তুতি চলছে পুরো উপজেলা জুড়ে। আমরা তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি।
(ঢাকাটাইমস/১৪ নভেম্বর/ইএইচ)