ফরিদপুর-৪ আসন: যে কারণে টানা ৩ পরাজয় কাজী জাফর উল্যাহর

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৯ | প্রকাশিত : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩৯

এবারও হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর বিপক্ষে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরেছেন তিনি। এ নিয়ে টানা ৩ বার হারতে হয়েছে তাকে।

পরিসংখ্যান বলছে, কাজী জাফর উল্যাহ নৌকা প্রতীক পেয়েছেন পরপর তিনবার। আর এই তিনবারই তিনি পরাজিত হয়েছেন মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর কাছে। ২০১৪ সালে নিক্সন চৌধুরী ২৬ হাজার ৫২ ভোটের ব্যবধানে, ২০১৮ সালে ৪৫ হাজার ৯৪৫ ভোটের ব্যবধানে এবং সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩ হাজার ৯৬৯ ভোটের ব্যবধানে কাজী জাফর উল্যাহকে পরাজিত করেন।

দলের প্রবীণ এই প্রেসিডিয়াম সদস্যের পরাজয়ের কারণ হিসেবে জেলার মানুষ দেখছেন ভিন্নভাবেই। কেউ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভক্তিকেই কারণ হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের বিরোধীরা এবারের নির্বাচনি মাঠে নিক্সনকে ভোট দিয়েছেন বলছেন। কারও মতে আবার নিক্সন তরুণদের সমর্থন পেয়েছেন এবারের নির্বাচনে। এবং তিনি নির্বাচন পরিচালনার কৌশলকে দায়ী করছেন। তবে কাজী জাফর উল্যাহর নেতাকর্মীরা মনে করছেন এবারের নির্বাচনে অর্থের কাছে পরাজয় হয়েছে আমাদের।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) তিনটি উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। এই আসনটি ফরিদপুরের সাবেক সংসদীয় আসন ৪ ও ৫ কে ভেঙে একটি করা হয়েছে। আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও গত তিনটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

নিক্সনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন বলেন, নিক্সন চৌধুরী এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকেন বলেই ভোটারদের ভালোবাসায় জিতে তিনবার জিতেছেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে নিজেদের লোক মনে করেন। এ জন্য ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের আস্থা ও ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছেন। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এই নির্বাচনি ফলাফলে।

বারবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যাওয়া প্রসঙ্গে কাজী জাফর উল্যাহর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, কাজী সাহেব একজন সৎ রাজনীতিক, ভদ্রলোক। বর্তমান সময়ে তার জন্য এই রাজনৈতিক পরিবেশ বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের নয়। তাছাড়াও নির্বাচনি এলাকায় তিনটি উপজেলায় আওয়ামী লীগ এন্টি ভোট বা সমর্থন নিক্সন সাহেব পেয়ে থাকেন, এর বাইরেও দলের মধ্যে বিভক্তি থাকায় আওয়ামী লীগের কিছু ভোটও তিনি পান বলেনই তার বিজয় হয়।

কাজী জাফর উল্যাহর সমর্থক ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান বলেন, এ আসনে তিনটি উপজেলার মধ্যে আমরা ভাঙ্গায় ভালো করেছি। নিক্সনের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছি। তবে সদরপুর ও চরভদ্রাসনে আমরা ভালো করতে পারিনি।

তিনি বলেন, ‘ভাঙ্গার তুলনায় সদরপুর ও চরভদ্রাসনে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের নির্বাচনি কৌশল আমরা ভাঙ্গায় যতটা প্রতিহত করতে পেরেছি, ওই দুটি উপজেলায় তা পারিনি।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাকের) সভাপতি অ্যাড. শ্রীপ্রা গোস্বামী বলেন, এটা সত্য যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফরিদপুর বেশ ভালো হয়েছে। তবে কাজী সাহেবের মতো একজন প্রবীণ নেতার বারবার হারের বিষয়ে তিনি বলেন, নিক্সন কাজী সাহেবের থেকে বয়সে অনেক কম হওয়ায় তিনি তৃণমূল মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে পেরেছেন, যেটা কাজী জাফর উল্যাহ পারেননি। এর বাইরেও তরুণ সমাজের সঙ্গে নিক্সনের সখ্য অনেক বেশি ছিল এবং নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগের বাইরে যারা (বিরোধীরা) তারা বরাবরই নিক্সনকে সমর্থন দিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

উপজেলা নির্বাচন: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রতিপক্ষের কর্মীকে পিটিয়ে জখম করলেন চেয়ারম্যান

ইসলামপুরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন আ. লীগের সালাম

মাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা

পাথরঘাটায় সাংবাদিকদের নামে সাইবার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন 

চুয়াডাঙ্গায় ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলায় বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

তীব্র গরমে ধান কাটতে গিয়ে কৃষকের মৃত্যু

শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‌্যাব কর্মকর্তা

মে দিবস উপলক্ষে বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

কুড়িগ্রামে অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর 

রায়গঞ্জে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল থানা পুলিশ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :