কুমিল্লা-৬ আসনে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ব্যাপক ভোট লুটপাট হয়েছে: অভিযোগ আ.লীগ নেতার

কুমিল্লা-৬ আসনে ব্যাপক ভোট লুটপাটের অভিযোগ তুললেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ও কুমিল্লা নগর আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মিঠু। ভোটের সময় সিসিটিভি ক্যামেরা সচল না থাকা, প্রশাসন সচেষ্ট না থাকাসহ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা-মামলার অভিযোগও করলেন পেশায় আইনজীবী এ আওয়ামী লীগ নেতা।
গত শুক্রবার নির্বাচন পরবর্তী এক কর্মীসভায় এসব অভিযোগ করেন মিঠু। কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা, যিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য। ৭ জানুয়ারির ভোটে তিনি নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের কাছে পরাজিত হন। একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সীমা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতিও। তিনি কুমিল্লার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের মেয়ে।
মিঠু বলেন, ‘যদি সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো কাজ করতো, প্রশাসন যদি শক্তিশালীভাবে ভোট লুটপাট বন্ধে সচেষ্ট থাকতো, তাহলে আমরা (ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী) অনেক ভোটের ব্যবধানে জিতে আসতাম।’
এমপি বাহারের দিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ নেতা মিঠু বলেন, ‘তারা দল থেকে আমাদের নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমদেরকে মামলার আসামি করছে। তাদের এসব অপরাধের জবাব ৭ তারিখের ভোটে জনগণ দিয়েছে। যদি সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো কাজ করতো, প্রশাসন যদি ভোট লুটপাট বন্ধে সচেষ্ট থাকতো, তাহলে আমরা (স্বতন্ত্র প্রার্থী সীমা) অনেক ভোটের ব্যবধানে জিতে আসতাম।’
ভোটে পরাজিতদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হওয়ার অভিযোগ করে মিঠু বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেককে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচনে পরাজয় মানে তো রাজনীতি ছেড়ে দেবো না। একদিন আমরাই নেতৃত্ব দেবো।’
কর্মীসভায় এমপি বাহারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান মিটু বলেন, ‘তিনি (এমপি বাহার) কখনো দলের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেন না। সীমা আপা ভোটে নামার পর একেবারে ছুটে ছুটে গেছেন। আমাদের কারণে তাদের মূল্যায়ন বেড়েছে।’
নির্বাচনের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ তুলে মিঠু বলেন, ‘হজরত পাড়াসহ আমাদের অসংখ্য নেতৃবৃন্দের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। আমরা তো প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা করিনি। হজরতপাড়ার ঘটনায় আমাকে আসামি করা হয়, কতটা দুঃখজনক। আজকে আমার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, আর আমি আসামি!’
কুমিল্লায় বাহার ও আফজল খানের পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রায় চার দশকের। বর্তমানে কুমিল্লা নগর আওয়ামী লীগের একটা অংশের নিয়ন্ত্রণ বাহারের হাতে। বাহারবিরোধীরা আছেন আফজল খানের পরিবারের বলয়ে।
সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সীমার পক্ষে ভোটের মাঠে ছিলেন বাহারবিরোধী নেতাকর্মীরা। বাহারের পক্ষের নেতাদের বিরুদ্ধে আফজল খানের রাজনীতি করে আসা নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগও ওঠে প্রায় সময়।
(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/ডিএম/কেএম)

মন্তব্য করুন