জুবাইদা রহমানে বদলে যেতে পারে সিলেটের ‘হিসাব-নিকাশ’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ও খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমান প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন। তিনি শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ মে ) বাংলাদেশে আসেন।
ডা. জুবাইদার প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সিলেট বিএনপিতে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। নেতাকর্মীদের মধ্যে আশা জেগেছে, এই মেধাবী নারী সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হলে দল পাবে নতুন প্রেরণা। তাকে স্বাগত জানিয়ে ইতিমধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন নগরীতে স্বাগত মিছিল করেছে।
সিলেটে জন্ম নেওয়া ডা. জুবাইদা রহমান নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলীর কন্যা। তার চাচা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব আইরিন খানের চাচাতো বোন।
যদিও কখনো সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হননি, তবু দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, জুবাইদা রহমান বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
জিয়া পরিবারের সাথে বৈরী সম্পর্ক থাকলেও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে কোনো প্রসঙ্গে জুবাইদাকে নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে শিক্ষিতা এবং ভালো বংশের মেয়ে। সে রাজনীতিতে এলে দেশের কল্যাণ হবে।’
ডা. জুবাইদার দেশে ফেরা এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পদক্ষেপ ঘিরে এখন রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা-কল্পনা।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ডা. জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
সাবেক সিলেট মেয়র বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়ার পুত্রবধূ এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের স্ত্রী, সিলেটের কৃতী সন্তান, দেশে-বিদেশে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানের দেশে ফেরা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গর্বের। এই সংবাদে কেবল একজন দলের কর্মী হিসেবে নয়, একজন সিলেটি হিসেবেও আমি আনন্দিত।’
রাজনীতিতে তার প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আরিফুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তার পরিবার। তবে দলের ও দেশের প্রয়োজনে, আমি বিশ্বাস করি- মেধাবী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সিলেটের এই কৃতী সন্তান অবশ্যই এগিয়ে আসবেন।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী জুবাইদা রহমানের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা তাকে স্বাগত জানাই। তিনি সিলেটের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। আমার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের স্ত্রী। তিনি মেধাবী চিকিৎসক। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বিদেশে রেখেই অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যূত করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তার দেশে ফেরায় আমরা উৎফুল্ল।‘
সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ওনাকে হয়রানি করেছে। দেশের একজন মেধাবী ও খ্যাতনামা চিকিৎসক জুবাইদা রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি আনন্দিত।’
জুবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের পর লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে এমএসএস ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৯৫ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন।
১৯৯৪ সালে তারেক রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের উন্নত চিকিৎসার জন্য তার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন ডা: জুবাইদা রহমান । তারপর থেকে স্বামীর সাথেই যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/৬মে/মোআ)

মন্তব্য করুন